কফির দাগ থেকে আপনার ঝকঝকে দাঁতকে রক্ষা করতে এ জনপ্রিয় পানীয় বর্জনের দরকার নেই। আর কেনই বা বর্জন করবেন? সীমিত মাত্রায় কফি পানে যে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায় তা স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের অজানা নয়। কিন্তু সমস্যা হলো, কফি দাঁতে দাগ সৃষ্টি করে, যার ফলে মুখের সৌন্দর্য বিঘ্নিত হয়। কিন্তু দুশ্চিন্তা করবেন না, কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চললে এ পানীয় পান করা সত্ত্বেও আপনার সুন্দর উজ্জ্বল দাঁতগুলো চকচকে থাকবে।

 পানি পান করুন

কফি পানের পর বেশিরভাগ মানুষ পানি পান করেন না, যেহেতু এটি নিজেই পানীয়। কিন্তু কফি পানের পর এক গ্লাস পানি পান করলে দাঁতে দাগ সৃষ্টিকারী লিকুইড দ্রুত নিষ্কাশিত হবে, যার ফলে আপনার দাঁত সৌন্দর্য হারাবে না। এছাড়া পর্যাপ্ত পানি পান হলো সারাদিন পানিশূন্যতায় না ভোগার একটি চমৎকার উপায়।

  দ্রুত পান করুন

আপনি পাঁচ মিনিটে এক কাপ কফি পান করেন, কিন্তু একই পরিমাণ কফি পান করতে আপনার সহকর্মীর লাগে দু’ঘন্টা। উভয়ের মধ্যে তুলনা করলে আপনার দাঁতে দাগ কম পড়বে। গবেষণামতে, যেসব লোকের কফি পান করতে বেশি সময় লাগে তাদের দাঁতে দাগ পড়ার সম্ভাবনা বেশি।

 কফিতে দুধ মেশান

কফিতে দুধ মিশিয়ে কফির দাগ সৃষ্টিকারী ক্ষমতাকে খর্ব করতে পারেন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ডেন্টাল হাইজিংয়ে প্রকাশিত একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে, দুধের প্রধান প্রোটিন ক্যাসেইন চায়ের ট্যানিনে লেগে থেকে দাঁতে দাগ পড়া প্রতিরোধ করে। কফিতেও অল্প পরিমাণে ট্যানিন থাকে, তাই কফি পানকারীরাও এ পানীয়তে দুধ মিশিয়ে উপকার পেতে পারেন। সর্বোত্তম ফলের জন্য প্রাণীজ দুধ ব্যবহার করুন, এক্ষেত্রে সয়া মিল্ক কার্যকর নয়।

 স্ট্র ব্যবহার করুন

স্ট্র ব্যবহারের মাধ্যমে পানীয় পান করলে তরল আপনার দাঁতের সংস্পর্শে কম আসবে- এর মানে হলো, কফি দ্বারা আপনার দাঁতে দাগ হওয়ার সম্ভাবনা কম। কফি অথবা অন্যান্য মিষ্টি পানীয় পানের জন্য স্বাস্থ্যবান্ধব স্ট্র ব্যবহারের চেষ্টা করুন।

কফি দাঁতে দাগ সৃষ্টি করে কেন?

এ প্রসঙ্গে বলতে গেলে আগে এনামেল সম্পর্কে বলতে হবে। এনামেল হলো দাঁতের বাইরের স্তর যা আপনার দাঁতের অন্যান্য স্তরকে সুরক্ষিত রাখে। দাঁতের এই এনামেলে মাইক্রোস্কোপিক গ্যাপ বা আণুবীক্ষণিক ফাঁক থাকে, অর্থাৎ এনামেলে যে ফাঁকগুলো থাকে তা অণুবীক্ষণযন্ত্র ব্যতীত খালি চোখে দেখা যায় না। যখন খাবার ও পানীয়ের কণা এসব ফাঁকে আটকে যায় তখন দাগ তৈরি হয়ে দাঁতের বাইরের স্তর বিবর্ণ হয়ে যায়, ফলে দাঁত প্রকাশ্যে আসলে কুৎসিত দেখায়। এসব কণা আপনার এনামেলের ফাঁকে যত বেশি সময় থাকবে, আপনার দাঁতের তত বেশি ক্ষতি হতে থাকবে- কারণ এ কণাগুলো দাঁতের অন্যান্য স্তরকেও অ্যাফেক্ট করতে শুরু করবে। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি কলেজ অব ডেন্টিস্ট্রির সহযোগী অধ্যাপক ডিনাইজ এস্তেফান বলেন, ‘আপনি যত বেশি কফি পান করবেন আপনার দাঁতে দাগ পড়ার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে, যদি আপনি এ দাগ প্রতিরোধের জন্য কিছুই না করেন। সময় পরিক্রমায় এ দাগ গভীর থেকে আরো গভীরে চলে যাবে। এ দাগকে ইনট্রিনসিক স্টেইন বলে, যা পরিষ্কার করা অনেক কঠিন।’