রান্নাঘর থেকেই আসে রূপচর্চার উপকরণ
শারমিন লাকি, উপস্থাপক, টিভি ব্যক্তিত্ব
স্বাস্থ্য এবং রূপসচেতন শারমিন লাকি ত্বকের যত্নে ভেষজ উপাদানের ওপরেই বেশি নির্ভরশীল বলে জানালেন। রাসায়নিক প্রসাধনীর মধ্যে খুব ভালো মানের একটি রাতের ক্রিম ব্যবহার করেন, যা বাড়তি আর্দ্রতাযুক্ত। শীত হোক বা গ্রীষ্ম—প্রতি মাসে একবার আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকে গিয়ে মুখ এবং হাত–পায়ের ত্বকের যত্ন নেন তিনি, এর কোনো ব্যতিক্রম হয় না কখনো। আবহাওয়া এবং ত্বকের ধরন বুঝে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে এই ফেসিয়ালটি করানো হয়। ‘আমার ত্বক মিশ্র। শুধু মুখের টি জোনটা (কপাল ও নাক) সামান্য তৈলাক্ত। আমার ত্বকের জন্য ভালো—এমন সব ভেষজ উপাদান দিয়েই প্রতি মাসে এই ফেসিয়ালটি করিয়ে থাকি। এখন শীত পড়তে আরম্ভ করেছে বলে ফেসিয়ালের উপাদানেও কিছু পার্থক্য আসবে।’ বললেন শারমিন লাকি। আরও জানালেন, এটি ছাড়াও প্রতি মাসে দুবার ভালো কোনো পারলারে গিয়ে সাধারণ ফেসিয়াল করিয়ে থাকেন। শারমিক লাকি মনে করেন, ৩৫ পেরিয়ে গেলে ত্বকের প্রতি বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত। আর ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টা এবং পরবর্তীকালে শীতের সময়ে ত্বক ভালো রাখার জন্য নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। তিনি এই নিয়মই মেনে থাকেন। রান্নায় পটু শারমিন লাকি তাঁর রূপচর্চার অনেক উপাদান নাকি রান্নাঘর থেকেই জোগাড় করে ফেলেন। নিজের ব্যবহৃত ঘরোয়া একটি ফেসপ্যাকের প্রণালিও জানিয়েছেন পাঠকদের। বললেন, ‘হাতের কাছে থাকা জিনিসপত্র দিয়ে চট করেই একটা ফেস প্যাক বানিয়ে ফেলা যায়। যেকোনো ঋতুতে শসা, টমেটো, কলা একটু চটকে নিয়ে বেসন ও মধু দিয়ে ১০-১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া দুধ খুব ভালো ক্লেনজারের কাজ করে। চিনি, মধু, ডিমের সাদা অংশ ও লেবুর রসের মিশ্রণ খুব ভালো ক্লেনজার এবং স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করে। আমি এই প্যাকটি বানিয়ে শরীর এবং মুখে মাঝে মাঝে ব্যবহার করি। মুখের ত্বক নাজুক বলে মৃদু মালিশ করি, শরীরে একটু জোরে ঘষলেও ক্ষতি নেই।’ এ ছাড়া প্রচণ্ড শীতে হাত–পা যখন খসখসে হয়ে যায় তখন পেট্রোলিয়াম জেলি এবং পানির সঙ্গে মিশিয়ে গ্লিসারিন ব্যবহার করেন। ত্বক ভালো রাখার জন্য মেকআপ খুব ভালোমতো তোলা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। বাদামের তেল দিয়ে প্রথমে ভারী মেকআপ তুলে ফেলেন। এরপর ভালো কোনো বেবি লোশন, স্ক্রাবার এবং ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মালিশ করে মেকআপ সম্পূর্ণভাবে তুলে ফেলেন। শীতের সময় প্রচুর টাটকা ফল, শাকসবজি খান তিনি। আর এ সময় পানি কম খাওয়া হয় বলে পারলে কুসুম কুসুম গরম করে পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন, তবু কোনোমতে পানি খাওয়া কমানো যাবে না এ সময়।
ত্বক শুষ্ক বলে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন মিম, ছবি:
নকশাসঠিক উপায়ে মেকআপ তোলা জরুরি
বিদ্যা সিনহা মিম অভিনেত্রী, মডেল
পেশাজীবনে এখন খুব ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে মিমকে। ছোট এবং বড় পর্দায় নিত্য উপস্থিতি তাঁর, নিজের জন্য তেমনভাবে সময় বের করতে পারছেন না এই অভিনেত্রী। প্রকৃতিপ্রদত্তভাবেই সুন্দর ত্বকের অধিকারী বলেই হয়তো ত্বকের যত্নে খানিকটা হেলাফেলা করার পরও সতেজ আছেন। তবে যত যা–ই হোক, ত্বক সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করেন। মিমের কথায়, ‘মানুষ হিসেবে আমি খুব অলস প্রকৃতির। তার ওপর কাজের চাপ। এ জন্য প্রতি মাসে নিয়মমাফিক ফেসিয়াল করার সময়ও হয়ে ওঠে না। এক–দেড় মাস পরপর ভালো পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল করাই। ভেষজ ফেসিয়ালটাই সাধারণত করা হয়। পারলারে গেলেই ফেসপ্যাক ব্যবহার করি। অন্য সময় বাড়িতে কোনো ফেসপ্যাক ব্যবহার করা হয় না।’ আরও জানালেন, তাঁর ত্বক খুব শুষ্ক। দেশের বাইরে থেকে নিয়ে আসা একটি ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার মুখে ব্যবহার করেন তিনি। এটি নিয়মিত ব্যবহার করেই ত্বক অনেক ভালো আছে তাঁর। সূর্যের আলো থেকে ত্বক রক্ষা করতে সানস্ক্রিন লোশন মাখেন। আর শীতের এই সময়টা হাত–পায়ে ত্বক খুব শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায় বলে একটু পরপর লোশন মালিশ করেন। লোশনের বোতল তাই সব সময় নিজের সঙ্গেই রাখেন বলে জানালেন। প্রয়োজন ছাড়া খুব চড়া মেকআপ কখনোই নেন না। মেকআপ করার পর আলসেমি বোধ করলেও সঠিক উপায়ে তা তুলে ফেলা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। নিয়মিত মেকআপ করার ফলে মুখে মেকআপ জমে জমে ব্ল্যাক হেডস দেখা দেয়, তাই স্ক্রাবার দিয়ে মুখ এবং নাকের চারপাশে আলতো ঘষে তা তুলে ফেলেন। আর যদি মেকআপ না করা হয়, তাহলে স্ক্রাবিং ছয়–সাত দিন পরপর করেন। শীতে ত্বকের বাড়তি যত্ন বলতে, অয়েল বেজড একটি ময়েশ্চারাইজার ও লোশন ব্যবহার করেন। এর বেশি কিছু নয়। ত্বক সুন্দর রাখতে মিম কি কোনো বিশেষ খাবার খেয়ে থাকেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রূপ লাবণ্যের জন্য আলাদাভাবে তেমন কিছু খাওয়া হয় না, তবে আমি এমনিতেই নিয়মিত সবুজ চা (গ্রিন টি), মালটার রস, নারকেল—এসব খেয়ে থাকি, এগুলোই আমার ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।’