গর্ভবতীদের যত্ন বললে মনে হবে, একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত চেকআপ; কিছু নিয়মমাফিক রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাম, কিছু ভিটামিন এবং ভালো ভালো খাওয়ার উপদেশ। মা যদি হন ডায়াবেটিস আক্রান্ত, তবে পরিচর্যা এখানেই শেষ নয়। যেসব মায়ের ডায়াবেটিস থাকে, তাকে মনে রাখতে হবে গর্ভকালে তার চোখে দৃষ্টি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি অন্যতম। আগে থেকেই এমন সমস্যা বিদ্যমান থাকতে পারে, যা মায়ের জানা না-ও থাকতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ যারা : যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস আছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে নেই; সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরল; মদ্যপান ও ধূমপানে অভ্যস্ত। ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি প্রাথমিক অবস্থায় কোনো উপসর্গ না-ও দিতে পারে।
ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি : এটি চোখের এমন একটি অবস্থা, যাতে ডায়াবেটিসজনিত কারণে চোখের রক্তনালিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসে। এ কারণে সেই রক্তনালি থেকে রক্তের জলীয় অংশ নিঃসৃত হয় বা রক্তক্ষরণ হয়। ফলে দৃষ্টি সমস্যা এমনকি অন্ধত্ব দেখা দেয়।
চোখ পরীক্ষা কেন প্রয়োজন : ডায়াবেটিস হলো কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অন্ধত্বের অন্যতম কারণ। এ অন্ধত্ব প্রতিরোধে রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হওয়া জরুরি। গর্ভাবস্থায় যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস ও রেটিনোপ্যাথি আছে, তাদের চোখের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। যাদের আগে থেকে রেটিনোপ্যাথি নেই, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যাটি নতুন করে দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যাদের রক্তের সুগারের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত বা বেশি।
চোখ পরীক্ষা কখন কীভাবে : সম্ভব হলে গর্ভাবস্থার আগেই একবার চোখ পরীক্ষা করানো ভালো। যদি রেটিনোপ্যাথি থাকে, তবে মাত্রা বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। যদি রেটিনোপ্যাথি না থাকে, তবে গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার চোখ পরীক্ষা করানো। যদি রেটিনোপ্যাথি ধরা পড়ে, তবে ২ থেকে ৩ মাস অন্তর নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি এর মধ্যে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, হঠাৎ কম দেখা, একটা জিনিস দুটি দেখা, চোখের সামনে কালো স্পট দেখা ইত্যাদি উপসর্গ থাকে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। চোখ পরীক্ষার সময় অবশ্যই চোখের দৃষ্টি, প্রেসার, রেটিনা বা অফথেলমোস্কোপি এবং ওসিটি করতে হবে।