দামে খুব সস্তা অথচ পুষ্টিগুণে অনন্য এমন খাবারের নামের তালিকায় উঠে আসবে কলমি শাকের নাম। কলমি শাক মূলত ভাজি অথবা ঝোল রান্না করে ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়। এছাড়া এই শাক দিয়ে পাকোড়া, বড়া ইত্যাদি তৈরি করে খাওয়া যায়।
কলমিশাক আঁশজাতীয় একটি খাবার। এতে খাদ্যোপাদান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এটি চোখ ভালো রাখে, হজমে সাহায্য করে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের অনুপাত ঠিক রাখে। ভর্তা কিংবা ভাজি করে তরকারী হিসেবে খাওয়া হয় এই কলমি শাক। কলমি শাকে রয়েছে অনেক ওষধি গুণ। আজ আলোচনা করব কলমি শাকের এমন ১০টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা যা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করে
জন্মের পর শিশু মায়ের বুকের দুধ না পেলে মাকে কলমি শাক রান্না করে খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাবে। বাচ্চারা যদি মায়ের দুধ কম পায় সেক্ষেত্রে কলমি শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বাড়বে এবং তখন বাচ্চা দুধ পাবে।
মাথাব্যথা দূর করে

যাদের মাঝে মাঝে বিনা কারণে মাথাব্যথা করার সমস্যা আছে তারা কলমি শাক খেলে উপকার পাবেন। অনিদ্রা দূরীকরণেও কলমি শাক খেতে পারেন।
ক্যালসিয়াম ঘাটতি পূরণ করে
কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে বলে এ শাক হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের কলমি শাক খাওয়ালে তাদের আর বাজারের প্রচলিত চটকদার ফুড সাপ্লিমেন্টের দরকার হয় না।
চোখের জন্য উপকারি

কলমিশাক চোখের জন্য বিশেষ উপকারি। কলমিশাক দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে। এছাড়া রাত কানা রোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কলমি শাক কয়েক সপ্তাহ প্রতিদিন একবেলা ভাজি রান্না করে খেলে রাত কানা রোগ ভালো হয়।
পুষ্টিতে ভরপুর
প্রতি ১০০ গ্রাম কলমি শাকে পাওয়া যায় ২৯ কিলো-ক্যালোরি, সোডিয়াম ১১৩ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩১২ মিলিগ্রাম, খাদ্য আঁশ ২.১ গ্রাম, প্রোটিন ৩ গ্রাম, কর্বোহাইড্রেটস ৫.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৫০ মিলিগ্রাম, লৌহ ২.৫ মিলিগ্রাম, জলীয় অংশ ৮৯.৭ গ্রাম।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

কলমিশাক মূলত আঁশজাতীয় খাবার। তাই শরীরের খাবার দ্রুত হজমের জন্য কলমিশাক বিশেষ উপকারি। নিয়মিত কলমি শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কোষ্ঠ কাঠিন্য হলে কলমি শাক তুলে সেচে এক পোয়া পরিমাণ রস করে আখের গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
গর্ভবতীদের জন্য উপকারি
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে, হাতে-পায়ে পানি আসে, সেই সময় কলমি শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে তিন সপ্তাহ খেলে পানি কমে যাবে।
দুর্বলতা কমায়
কলমি শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য-শক্তি থাকায় শারীরিক দুর্বলতা দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। রোগীদেরকে দ্রুত সুস্থ হবার জন্য তাই কলমিশাক খাওয়ানো হয়ে থাকে।
রক্তশূন্যতা দূর করে

কলমি শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে লৌহ থাকায় এই শাক রক্তশূন্যতার রোগীদের জন্য দারুণ উপকারি। সারা দেহে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখতেও এই শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
জ্বালাপোড়া কমায়
প্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রণা করলে কলমির রস করে ৩/৪ চামচ পরিমাণ ৩ সপ্তাহ খেলে ওই জ্বালা কমে যায়। আর হাত-পা বা শরীর জ্বালা করলে কলমি শাকের রসের সঙ্গে একটু দুধ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।