আপনি হয়তো রোজ রুটিন মেপে খাবার তালিকাটি মেনে চলছেন। কিন্তু এরই মধ্যে একটি-দুটি নিমন্ত্রণের সংবাদ এসে হাজির! আর সামনেই ঈদ। এ সময়টায় পরিবার কিংবা বন্ধুমহলের কাছ থেকে পাওয়া হয় বেশ কয়েকটি নিমন্ত্রণ। আর সেগুলোতে না গেলেই যে নয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার প্রতিদিনকার ডায়েটে হেরফের হতে পারে।
আবার এদিকে ঈদের দিনে সামান্য পায়েস কিংবা ফিরনি তো না করার উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে কী করবেন?
আছে সমাধান
পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো বলেন, ‘শুধু কোনো দাওয়াত নয়, এমনিতেও দেখা যায় কেউ হয়তো দীর্ঘদিন একটানা ডায়েট করেছেন। কিন্তু তারপরে বেশ কিছুদিন অতিরিক্ত ক্যালরি বা প্রোটিনযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলছেন। সে ক্ষেত্রে আগের চেয়েও ওজন হুট করেই বেশি বেড়ে যেতে পারে’। আর এ কারণেই আবার আগের রুটিনে ফিরে আসা চাই অল্প কিছুদিনের মধ্যেই।
কিন্তু যাঁদের ক্ষেত্রে ওজন কিছুটা বেড়ে গেল কিংবা দাওয়াতে একটু বেশিই অনিয়ম হয়ে গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে মেনে চলা চাই আরও কিছু বিষয়।
মাংসের বদলে সবজি
দাওয়াতে মাংস থাকবে না এমন তো হয় না! তাই ডায়েটে ফিরে আসবার সঙ্গে মাংসকে না বলুন। আখতারুন্নাহার আলো জানান, মাংস বিশেষ করে রেড মিট কিংবা মোটা আঁশযুক্ত মাংস খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়।
সবচেয়ে ভালো হয় মাছ এবং প্রচুর পরিমাণে সবজি খেলে। কেননা মাছে চর্বি থাকলেও সেটির পরিমাণ রেড মিটের চেয়ে অনেক কম। যাঁদের হৃদ্রোগের সমস্যা আছে তাঁদের ক্ষেত্রেও এই চর্বি ক্ষতিকর নয়। চাইলে আপনি মুরগির মাংসও খেতে পারেন, তবে সেটি হতে হবে অবশ্যই চর্বিবিহীন।
কম কার্বোহাইড্রেট
কার্বোহাইড্রেট প্রত্যেকেরই প্রয়োজন, তবে তা সঠিক পরিমাণে। যাঁরা ডায়েট করছেন তাঁরা অনেক সময়ে খাদ্যের এই উপাদান এড়িয়ে চলেন, যা একেবারেই ঠিক নয়। কেননা এতে শরীরে প্রোটিন ও হিমোগ্লোবিনের ঘাটতির পাশাপাশি নিম্ন রক্তচাপের সমস্যাও দেখা দেয়। তাই প্রতিদিনই পরিমিত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করুন।
ভাতের পরিবর্তে আটার রুটি, ওটস, সামান্য চিড়া-মুড়িও খেতে পারেন। চাইলে আপনি দুবেলা রুটির পরিবর্তে এক বেলা ভাত খেতে পারেন। আর এটি একেবারেই নির্ভর করবে ব্যক্তির উচ্চতা, ওজনের ওপর।
তবে ভাত কিংবা রুটি-যেটাই খাওয়া হোক না কেন, সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে সবজি খাওয়া চাই।
সেই সঙ্গে সালাদ
শুধু যাঁরা ডায়েট করছেন তাঁরাই নন, প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই খাবারের সঙ্গে সালাদ রাখা চাই অন্তত দুই বেলা। কেননা সালাদে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এতে পানিশূন্যতা কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও কমে যায়। তবে প্রতিদিন কী আর এই এক ধরনের সালাদ খেতে ইচ্ছে করে? মোটেই না। তাই চাইলে সালাদের উপকরণেও ভিন্নতা রাখতে পারেন।
সামান্য টক দই অথবা বিভিন্ন ফল দিয়েও তৈরি করা যেতে পারে দুবেলার সালাদ। আজকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে। তালিকায় রাখতে পারেন এগুলোও।
খেয়াল করুন
* আপনার ওজন অনুযায়ী সালাদ এবং সবজির সঙ্গে অল্প পরিমাণে মাংসও খেতে পারবেন। তবে অবশ্যই সঠিক পরিমাণে।
* প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। কেননা পানি আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরের হাইড্রেশন ব্যবস্থা ঠিক রাখে।
* নিয়মিত ব্যায়াম করুন। হয়তো ব্যস্ততার মধ্যে হয়ে ওঠে না। কিন্তু অন্তত ইয়োগা এবং এক বেলা হাঁটার চেষ্টা করুন। এতে মাংসপেশিও ঠিক থাকে।
* যাঁদের বহুমূত্র, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁরা ডায়েট ছাড়াও সাধারণ খাদ্যতালিকা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
* তাহলে ফিরে আসা যাক আগের রুটিনে!