
সকালে হয়তো অভ্যাসবশতই প্যাড পরেছিলেন কুশল মেন্ডিস। তখনো নিশ্চয় আশা করেননি মাত্র ৩ বল পরেই নেমে যেতে হবে মাঠে। কিন্তু মিচেল স্টার্কের দুর্দান্ত এক বলে ফিরলেন দিমুথ করুনারত্নে। তড়িঘড়ি করেই নামতে হলো মেন্ডিসকে। নামলেন, ব্যাট করলেন আর রেকর্ড গড়লেন। নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ এখন মেন্ডিসের। আর সেই রেকর্ডে চাপা পড়ল অস্ট্রেলিয়া। ৮৬ রানের ঘাটতি কাটিয়ে শ্রীলঙ্কার লিড এখন ১৯৬ রান। পাল্লেকেলে টেস্টে চালকের আসনে এখন শ্রীলঙ্কাই।
৭ টেস্টের ছোট্ট ক্যারিয়ার। এর আগে মেন্ডিসের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৫৩ রানের। মূলত আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরিচিত। দলের প্রয়োজনে নিজের চেনা রূপটিকে বদলে ফেলে ব্যাটিং করেন কি না, সেটিই ছিল দেখার বিষয়। মাত্র ৬ রানেই ২ উইকেট নেই দলের, ৪৫ রানে ৩! কিন্তু মেন্ডিস সে পথে গেলেন না। এমনই এক আক্রমণাত্মক ইনিংস খেললেন, অস্ট্রেলিয়ান বোলিং আক্রমণই হয়ে পড়ল দিশেহারা। প্রায় একাই টেনে নিলেন দলকে। নাথান লায়নকে ছক্কা মেরে যখন সেঞ্চুরি পেলেন, স্কোরবোর্ডে শ্রীলঙ্কা ১৪০/৪!
সে সময় মনে হয়েছিল চার্লস ব্যানারম্যানের রেকর্ডটিকেই না ভেঙে দেন মেন্ডিস! তখন শ্রীলঙ্কার ৭১ ভাগ রানই ছিল মেন্ডিসের। ইতিহাসের প্রথম টেস্টেই দলের ৬৭ ভাগেরও বেশি রান একাই করেছিলেন অস্ট্রেলীয় ব্যানারম্যান, যে রেকর্ডটি আজও অম্লান। কিন্তু ব্যানারম্যানকে সম্ভবত ছাড়িয়ে যাওয়া আর হচ্ছে না মেন্ডিসের। কারণ দীনেশ চান্ডিমাল (৪২) ও ধনঞ্জয় ডি সিলভাও (৩৬) রান পাওয়ায় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেটে ২৮২ রানের সংগ্রহে মেন্ডিসের অবদান দাঁড়িয়েছে ৫৯.৯২ শতাংশ।
শ্রীলঙ্কার ২০০ ছুঁই–ছুঁই লিড নেওয়াতেই নিশ্চিত হয়ে গেছে পাল্লেকেলে টেস্ট জিততে চাইলে রেকর্ড গড়তে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। উপমহাদেশে ২০০ রানের বেশি তাড়া করে মাত্র একবারই টেস্ট জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। সেটিও ২০০৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টে।
অস্ট্রেলিয়াকে রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার পথেই রেকর্ড গড়েছেন মেন্ডিস। দিন শেষে ১৬৯ রানে অপরাজিত তিনি। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কলম্বোতে সর্বোচ্চ ১৩৭ রান করেছিলেন অশঙ্কা গুরুসিনহা। সে রেকর্ড ভেঙে এখন কুমার সাঙ্গাকারার রেকর্ডের পেছনে ছুটছেন মেন্ডিস। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৯২ রানের ইনিংসটি সাবেক এই অধিনায়কের।
আজ যেভাবে খেলেছেন মেন্ডিস, কাল এ রেকর্ডটি খুব সহজেই করে ফেলার কথা তাঁর। সূত্র : টেন ক্রিকেট।