hyuki মাহিকে যখন ফোন দিলাম তিনি কালশীতে। একটা পারিবারিক প্রোগ্রাম ও ইফতার পার্টিতে গিয়েছিলেন। কোথায় দেখা হবে তাহলে? মাহি বললেন, 'আপনি সাঁতারকূলে চলে আসেন!' এই সাঁতারকূলটা কোথায়? বেরাইদ চেনেন? আমি বললাম ব্রেরাই চিনি অবশ্য। মাহি বললেন ওটার কাছাকাছি। সিএনজি নিয়ে চলে গেলাম বেরাইদ। সেখান থেকে সাঁতারকূল। তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ইফতারের সময়। কোনোরকম আগে একটা দোকানে ঢুকে ইফতার করলাম। ঢাকার অদূরে এক গ্রামের নাম সাঁতারকূল। ইফতারের আগে যেন সব মরে গেছে গ্রামের ছোট বাজার। যে দোকানে ইফতার করলাম সেটা চাটাই মোড়ানো একটা দোকান। আমার সাথে এক ছোট ভাই রয়েছে। সে আমার সাথে দেখা করতে এসেছে। তাকে নিয়ে রওনা হয়ে গেছিলাম। ইফতার করতে গিয়ে দেখলাম মুড়ি, পিয়াজু, চপ, ছোলা, বেগুনি। এই কয়েকটা আইটেম। নেই বুন্দিয়া, ঠান্ডা পানি। অবশ্য সেখানের টিউবওয়েলের পানিও যথেষ্ট ঠান্ডা। ইফতার করলাম। আইটেম কম কিন্তু তৃপ্তি কম ছিল না। ইফতারের কিছুক্ষণ পরে ফোন দিলাম। মাহি রওয়ানা হয়েছে। আমরা পাশের একটা চায়ের দোকানে বসে চা খেলাম। হিন্দি সিনেমার অংশ বিশেষ দেখলাম। মাহি চলে এসেছেন। ফোনে জানালেন প্রজাপতি গার্ডেনে চলে আসেন। আমি দ্বোতলায় আছি। প্রজাপতি গার্ডেনে ঢুকেই খেয়াল করলাম বেশ আয়োজন নিয়ে ছবির শুটিং চলছে। নায়ক বাপ্পী রয়েছেন। আমি দ্বোতলায় গিয়ে ফোন দিলাম। কেন না তার দেখা পাচ্ছিলাম না। জানালেন তিনতলায় আছেন, বলতে ভুল করলেন। রুমে ঢুকতেই বেশ হাস্যোজ্জ্বোল মুখে বললেন মাহি, 'আসেন, অনেক দেরি করিয়ে ফেলুলাম। আমার ক্ষিদে লেকগেছে, একটু খেয়ে নেই। আপনারা কি খাবেন?' মাহি ছোলা-মুড়ি চামুচ দিয়ে খেতে খেতে কথা বলছিলেন। বেশ আন্তরিক। মাহির আম্মু বসার জায়গা করে দিলেন। আমরা বসে আলাপ করতে শুরু করলাম। মাহি জানালেন, 'পলকে পলকে তোমাকে চাই’ ছবির শুটিং করছেন। তাঁর নায়ক বাপ্পী। ঈদ কোথায় করবেন? মাহি বললেন, 'রোজার ঈদ তো আমরা রাজশাহীতে করার চেষ্টা করি। দেখি যাওয়ার চেষ্টা করবো। যদিও আমার জন্ম কিংবা পরিবার সবাই ঢাকায় থাকে। আত্মীয় স্বজনরাও ঢাকায় থাকে। কোরবানির ঈদ ঢাকায় করি। এখন যে খাচ্ছেন, ইফতার পার্টিতে গিয়েছিলেন, ওখানে কিছু খেতে পারেন নি? না ভাইয়া আসলে আমি প্রোগ্রাম গুলোতে যাই ঠিকই কিন্তু কখনই খেতে পারি না। আর রোজা ছিলাম তো ক্ষুধা লেগেছে বেশ। রোজা থেকে কাজ করেম্ন কিভাবে? আসলে ভাইয়া আমি তো ছোটবেলা থেকেই সব রোজা করি। কোনোভাবেই রোজা মিস করি না। ডাক এলো শট দিতে হবে। সরি বলে মাহি নিচে চলে গেলেন। আমাদেরকেও নিচতলার সোফায় বসতে বললেন। নিচের সোফায় বসলাম, মাহি একটু পরে শট দিয়ে এসে বললেন 'সরি ভাইয়া।' মাহির বিনয় সবসময়ে মুখে লেগে আছে। ইটস ওকে। মাহি বসলেন। মেক ঠিক করতে করতে কথা বলছিলেন। আমি বললাম রাজশাহীতে ঈদ কেন? নতুন বরের সাথে ঈদ হবে না? এবার তো আপনার ঈদ স্পেশাল হবার কথা? মাহি হাসতে হাসতে বললেন, না আমার স্বামীর কাছে তো আমাকে এখনো তুলে দেয় নি, ঈদের পর অনুষ্ঠান করে আয়োজন করা হবে। এখন তো, বাবার বাড়িতেই থাকতে হবে তাই না? বেশ কিছুক্ষণ তিনতলায় কথা হলো মাহির সাথে। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। যখন প্রজাপতি গার্ডেন থেকে বের হলাম তখন বেশ অন্ধকার বাইরে। রাস্তায় কাদা জমে গেছে। রাত ১০ টা বেজে গেছে। আমরা চললাম একটা সিএনজির সন্ধানে..