y,lib দূরের মানুষ কিংবা সমালোচকদের সমালোচনা ততটা কষ্ট দেয় না, যতটা দেয় প্রিয় মানুষের কাছ থেকে আসা সমালোচনা। দুদিন ধরে মেসি হয়তো এ রকমই একটা কষ্ট পুষে রেখেছিলেন বুকের মধ্যে। যে মানুষটাকে নিজের আদর্শ ভাবেন, দেশের হয়ে যাঁর কীর্তিকে নিয়েছেন নিজের অনুপ্রেরণা হিসেবে, সেই ডিয়েগো ম্যারাডোনাই কিনা এত কঠিন একটা কথা বললেন তাঁর সম্পর্কে! নেতা হওয়ার জন্য যে ব্যক্তিত্ব লাগে, সেটি নেই মেসির! ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কোচ জেরার্ডো মার্টিনো। বলে দিয়েছিলেন, ম্যারাডোনা যা-ই বলুক, মেসিকে তিনি ভালো নেতাই মনে করেন। সবার নেতৃত্বের ধরন তো এক রকম হয় না। মেসি তাঁর মতো করেই নেতৃত্ব দেন। কিন্তু সেসব তো কোচের কথা। মেসিকেও তো বোঝাতে হতো, তিনি আসলেই নেতা। মাঠে তাঁর খেলাই বাকিদের জন্য উদাহরণ ও অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করে। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক সেটাই করলেন। চোট কাটিয়ে উঠে শিকাগোতে আজ পানামার বিপক্ষে নেমেছিলেন আধা ঘণ্টার জন্য। ওই আধা ঘন্টাতেই শিকাগোর ৫৪ হাজার দর্শক দেখল এবং বুঝল কেন মেসি এই সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। ৬১ মিনিটে মাঠে নামার পর ৬৮ মিনিটে প্রথম গোল, ৭৮ মিনিটে দ্বিতীয়টি। ৮৭ মিনিটে দেশের হয়ে নিজের ৫৩ নম্বর গোলটি করে পুরো করলেন হ্যাটট্রিকও। টুইটারে আলোচনা শুরু হলো কোন গোলটার চেয়ে কোনটা বেশি সুন্দর। হেরে গিয়েও পানামার কোচ হার্নান দারিও গোমেজ বললেন, ‘লিওনেল মেসি স্রেফ একটা দৈত্য। ও মাঠে নামার আগে আমরা প্রায় সমান তালে লড়ছিলাম। কিন্তু সে মাঠে নামার পর সব বদলে গেল। মেসির সামনে সামান্য একটা ভুল করলে সেটিরও চড়া মূল্য দিতে হয়।’ এই যে গোমেজ বললেন, ‘সে মাঠে নামার পর সব বদলে গেল’—এই কথাটাই তো ম্যারাডোনাকে শোনাতে চান মেসি। নেতার কাজ তো সেটিই। নিজের খেলা দিয়ে বাকিদের অনুপ্রাণিত করা। মুখে কিছু না বললেও পারফরম্যান্স দিয়ে আজ ম্যারাডোনাকেই একটা জবাব দিলেন না মেসি? হ্যাটট্রিক হলো, আর্জেন্টিনা জিতল, কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হলো। আর মাত্র ৩ গোল করলেই আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা বাতিতুস্তাকেও ছুঁয়ে ফেলবেন মেসি, ৪ গোল করলে রেকর্ডটা শুধুই তাঁর হয়ে যাবে। পানামার বিপক্ষে পাওয়া এই ছন্দটা ধরে রাখলে হয়তো এই টুর্নামেন্টেই সেই কীর্তিটা গড়ে ফেলবেন মেসি!