
ঢাকা থেকে অস্ট্রেলিয়ার ক্যান্টারবারি শহরের দূরত্ব কত? গুগল বলছে, কিলোমিটারের হিসাবে সংখ্যাটা প্রায় আট হাজারের কাছাকাছি। ঢাকার সেন্ট যোসেফ স্কুল আর নটর ডেম কলেজ পেরিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য শাকির করিম পাড়ি জমিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। জন্মভূমি থেকে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার দূরের এক শহরের সেরা নাগরিকদের তালিকায় উঠে গেছে তাঁর নাম!
এর আগেও নিজের দক্ষতা আর পরিশ্রম দিয়ে নানা অর্জনে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। ক্যান্টারবারি শহরের ‘বর্ষসেরা নাগরিক’ হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যে সেরা দশে জায়গা করে নেওয়া তাঁর সাম্প্রতিক সাফল্যের একটি। গত জানুয়ারিতে ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’ উপলক্ষে এই স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।
সমাজে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্বেচ্ছাসেবাসহ বিশেষ কাজে অবদান রাখার জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি নগরী থেকে এই মনোনয়ন দেওয়া হয়। ই-মেইলে কথা হলো শাকিরের সঙ্গে। পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে জানালেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে অনেক বড় পাওয়া। আমরা যারা বাইরে থেকে পড়তে আসি, তাদের নানা ধরনের সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধিসহ নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি।’ ক্যান্টারবারি শহরের মেয়র ব্রায়ান রবসনের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন শাকির। তাঁর পুরস্কার পাওয়ার খবর ছবিসহ প্রকাশ পেয়েছে সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে। শাকির এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-কমার্স এবং ইন্টারনেট সিকিউরিটি বিষয়ে পিএইচডি করছেন।
শুধু নগরীর বর্ষসেরা নাগরিক হিসেবে মনোনয়নই নয়, গবেষণায় সাফল্য দেখিয়ে গত বছর এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেরা হিসেবে সম্মানজনক ‘গোল্ডেন কি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন শাকির করিম। সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের আয়োজনে রিসার্চ সিম্পোজিয়ামে গবেষণাপত্রের জন্যও পেয়েছেন বিশেষ সম্মাননা। যেখানে ১৫টি ক্যাম্পাসের কয়েক শ গবেষকে গবেষণা বা প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে এই সম্মানজনক পুরস্কার দেওয়া হয়। সেরা গবেষক হয়ে ওঠার পেছনের রহস্য জানতে চাইলে শাকির বলেন, ‘গবেষণার জন্য কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন। গবেষণার মান সমৃদ্ধ করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার মান, ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষকতার কৌশল উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য আমি আগেও একবার ইনস্টিটিউট অব কমার্স থেকে সেরা প্রশিক্ষকের পুরস্কার পেয়েছি। পুরস্কার পাওয়া সব সময়ই আনন্দের।