ভেবেছিলাম, মাত্র দুটো ম্যাচ রয়েছে। যদি জিততে পারি…’। চিটাগং আজ জিতলে পয়েন্ট টেবিলের হিসাব-নিকাশ অন্যরকমই হতে পারত। তা আর হলো কোথায়! যেদিন আমি আর দিলশান ভালো করেছি, সেদিন জিতেছি। দুটো জয় এসেছে এমনভাবেই।’ জানালেন চিটাগং ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ৯ ম্যাচে ৭ হারে আক্ষরিক অর্থেই নিভে গেল চিটাগংয়ের আশার বাতি।অথচ চিটাগংয়ের টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিল বিরাট প্রত্যাশা নিয়েই। দেশি-বিদেশি মিলে সবচেয়ে ভারসাম্য দলই হয়েছিল তাদের। শুরু থেকেই জ্বলে উঠেছিলেন অধিনায়ক নিজেও। টুর্নামেন্টের শেষ পর্যায়ে এসেও তামিমের পারফরম্যান্সে ছিল ধারাবাহিকতার ছাপ।৩ ফিফটিতে ২৯৮ রানে এখনো পর্যন্ত সবার ওপরে বাঁহাতি ওপেনার। তামিমের সঙ্গে মাঝেমধ্যে সঙ্গত করেছেন লঙ্কান ওপেনার তিলকরত্নে দিলশান। ৯ ম্যাচে ১ ফিফটিতে দিলশানের রান ২৩২। তবে দুই ওপেনার বাদে আর বলার মতো পারফরম্যান্স নেই চিটাগংয়ের কোনো ব্যাটসম্যানের।বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ আমির ও শফিউল ইসলাম যা একটু আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। আমির পেয়েছেন ১৪ উইকেট, শফিউল ১৩। তবে এক-দুজনের পারফরম্যান্সে দুই-একটা ম্যাচ হয়তো জেতা যায়। ধারাবাহিক সাফল্য পাওয়া কঠিনই। সবার আগে শেষ চারে পা রাখা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা যেমন বলেছেন, ‘ধারাবাহিক সাফল্য পেতে পারফর্ম করতে হবে দল হিসেবে’। একই কথার প্রতিধ্বনি সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়া চিটাগং অধিনায়ক তামিমেরও, ‘যেদিন আমি আর দিলশান ভালো শুরু করেছি, ওই দিন হয়তো ভালো কিছু হয়েছে’। দুটি ম্যাচে জিতেছি এভাবেই। আর কোনো ম্যাচে তেমন কোনো জুটিও দেখিনি। স্থানীয় বলেন আর বিদেশি— তেমন কিছু দেখিনি। সত্যি খুবই হতাশাজনক।এটা দলীয় খেলা, এখানে নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করা যায় না। খেলোয়াড়দের সবাইকেই পারফর্ম করতে হবে। মাশরাফি কালই বলেছিলেন, তার দলের সাফল্যের মূলে স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়মিত জ্বলে ওঠা।এটার খুব অভাব ছিল চিটাগংয়ে। শফিউল বাদে আর কোনো স্থানীয় বোলার ৫ উইকেটও পাননি। ব্যাটসম্যানদের অবস্থাও তথৈবচ। স্থানীয়দের নিষ্প্রভ থাকায় চিটাগং কতটা ভুগেছে, সেটিই ব্যাখ্যা করলেন তামিম, ‘স্থানীয়দের মধ্যে যারা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, হয়তো চেষ্টা করেছে। তবে পারফরম্যান্স ঠিকমতো হয়নি’। আর পারফরম্যান্স ভালো না হলে জেতাটা কঠিন হয়ে যায়। দলে বড় বড় বিদেশি খেলোয়াড় নিতে পারেন, তবে স্থানীয়রা পারফর্ম না করতে পারলে জেতার সুযোগ কমে যায়।স্থানীয় খেলোয়াড়দের সহায়তা আপনার অবশ্যই লাগবে। বরিশালকে দেখেন, গেইল-লুইস থাকার পরও ৫৮ রানে গুটিয়ে গেছে। আমাদের এই জায়গায় সমস্যা ছিল। যতটা ভালো করার কথা ছিল, স্থানীয় খেলোয়াড়দের ততটা করেনি। শফিউলই যা একটু ভালো করেছে। ওকেও বেশির ভাগ সময়ই কঠিন সময়ে বল করতে হয়েছে।তবে তামিমের পুরোপুরি সন্তুষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতি। চিটাগং অধিনায়কের বড় আফসোস, মালিক পক্ষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। পরেরবার একই দলে খেলা ও ভালো কিছুর আশা নিয়ে আপাতত টুর্নামেন্ট শেষ করতে হচ্ছে তামিমকে। সেটি হয়তো শেষই হয়ে গেল কাল। চোটের কারণে দলের শেষ ম্যাচে না-ও খেলতে পারেন চিটাগং অধিনায়ক।