ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস! ক্রিকেটের বহু পুরোনো কথা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল সে কথাই সত্যি হলো আবার। ২১৩ রান করেও প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবকে আটকে দেওয়ার যে সম্ভাবনা তৈরি করেছিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স, সেটা ফসকে গেল ফিল্ডারদের হাত গলেই। ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগে উঠে গেল দোলেশ্বর।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে ব্যাটিং একটু কঠিনই মনে হচ্ছিল। তার ওপর স্কোরবোর্ডে অল্প রান বলে গাজী গ্রুপের বোলাররাও চাইলেন আগুন ঝরাতে। নতুন বলে সাজিদুল ইসলাম আর মোহাম্মদ শরীফ রীতিমতো কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দেন দোলেশ্বরের ব্যাটসম্যানদের। উইকেট না পেলেও ৫ ওভারের প্রথম স্পেলে শরীফ রান দেন মাত্র ১৩, মেডেন ওভার একটি। সাজিদুল ছিলেন আরও কৃপণ। ৬-২-৯-১, এই হলো তাঁর প্রথম স্পেল। তাতে প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২২ রান তুলতে পেরেছিল দোলেশ্বর। নিয়ন্ত্রণটা গাজীর বোলাররা ধরে রাখেন মাঝ ইনিংস পর্যন্ত। ২৫ ওভার শেষেও দোলেশ্বরের স্কোর তাই ৩ উইকেটে ৭৪!
কিন্তু খেলা শেষে গাজীর সান্ত্বনা হয়ে থাকল ম্যাচটাকে ৪৯তম ওভার পর্যন্ত নিতে পারাই। ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসের মহড়ায় জয়ের সম্ভাবনা ফিকে হয়ে যায় আস্তে আস্তে।
৪৩ রান করা রনি তালুকদার জীবন ফিরে পেয়েছেন দুবার, দুটি ক্যাচই পড়েছে তাঁর ২০ রানের মধ্যে। গাজী গ্রুপের ফিল্ডারদের হাত ফসকে ক্যাচ পড়েছে আরও ৩টি। শামসুর রহমান একাই ছেড়েছেন দুটি। অন্যটি ফারুক হোসেন। উইকেট যতই ব্যাটিং-অবান্ধব হোক, প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের বারবার জীবন ফিরিয়ে দিলে ম্যাচ জেতা কঠিন।
অবশ্য দোলেশ্বরের জয়ে যে শুধু গাজীর ফিল্ডারদেরই ‘অবদান’, তা নয়। তাদের জয়ের নায়ক ভারতীয় অলরাউন্ডার অশোক মেনারিয়া। ৭০ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর নাসির হোসেনের (৪০) সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৬৪ ও রনির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৭০ রানের দুই জুটিতেই জয় নিশ্চিত করে ফেলেন দলের।
৫৯ রানে অপরাজিত থাকার আগে মেনারিয়া বাঁহাতি স্পিনে নিয়েছেন ২৯ রানে ৩ উইকেট। সেই তিন ব্যাটসম্যানও আবার এনামুল হক, মেহেদী হাসান ও ইলিয়াস সানি।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেছেন ইলিয়াস। ৬৮ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর উইকেটে আসেন, এক শর আগে বিদায় নিতে দেখেন আরও দুই ব্যাটসম্যানকে। ইলিয়াস বাড়তি সতর্ক হয়ে যান সে কারণেই। ৪৬ রানের মধ্যে প্রথম ৩১ নিয়েছেন দৌড়ে। দুই বাউন্ডারির প্রথমটি মেরেছেন ৫৭তম বলে।
ইলিয়াস ইনিংস মেরামতের কাজটা করে দেওয়ার পর গাজীর স্কোর দুই শর ওপারে নিয়ে যান শরীফ। ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার চেষ্টা করেছেন রানের গতি বাড়াতেও। নয় নম্বরে নেমে চার বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় মাত্র ২৫ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত শরীফ। এর মধ্যে এক ছক্কা ও এক চারে আল আমিনের শেষ ওভারেই নিয়েছেন ১৩।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৫০ ওভারে ২১৩/৮ (ইলিয়াস ৪৬, শরীফ ৩৯; মেনারিয়া ৩/২৯)। প্রাইম দোলেশ্বর: ৪৯ ওভারে ২১৭/৫ (মেনারিয়া ৫৯, রনি ৪৩, নাসির ৪০; শরীফ ১/৩২)।
ফল: প্রাইম দোলেশ্বর ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: অশোক মেনারিয়া।