মেহেদী হাসান একবার বেশ আফসোস করেই জানিয়েছিলেন, অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের আলোচিত অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে তাঁর নাম নাকি অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন! এবার অবশ্য তাঁকে খুব একটা নাম-বিভ্রাটে পড়তে হয়নি। এই মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রথম সেঞ্চুরি করা মেহেদীকে নিয়ে বড় বড় খবর ছাপা হয়েছে, সঙ্গে ছবিও। নিজেকে চেনানোর এই তো ‘সহজ’ উপায়!
সেঞ্চুরি দিয়ে লিগ শুরুর ইমতিয়াজের। ছবি: প্রথম আলোমজার ব্যাপার হলো, এবারের প্রিমিয়ার লিগটাকে যেন চেনানোর সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন অনেকে। এ পর্যন্ত হওয়া ৯ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন ছয়জন। ছয় ব্যাটসম্যানের কারও নেই তারকা-তকমা। এঁদের কেউ পেয়েছেন লিস্ট ‘এ’-তে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরির স্বাদ, কেউ-বা দীর্ঘদিন পর।
২২ এপ্রিল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মেহেদী খেললেন ৮৯ বলে ১০৩ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। লিস্ট ‘এ’-তে অভিষেকেই মাত! ম্যাচ শেষে মেহেদী বলেছিলেন, প্রথম শ্রেণিতে দুটি সেঞ্চুরির অভিজ্ঞতা বেশ কাজে দিয়েছে, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অনেক বড় বোলারদের বল খেলেছি। ভালো ভালো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে খেলেছি। সে জন্য চাপ কিছুটা কমে গেছে। ম্যাচে ও রকম চাপ অনুভব করিনি।’
সেঞ্চুরি দেখা পেয়েছেন আল আমিনও। ছবি: প্রথম আলোএকই দিনে বিকেএসপিতে ক্রিকেট কোচিং স্কুলের (সিসিএস) সঙ্গে নিখুঁত ব্যাটিংয়ে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন প্রাইম দোলেশ্বরের ইমতিয়াজ হোসেন। আট বছর পর লিগে সেঞ্চুরি করে ইমতিয়াজের আত্মবিশ্বাস ঊর্ধ্বমুখী, ‘এবার শুরুটা ভালো হয়েছে। এটা ধরে রাখতে চাই। আসলে ভালো না খেললে ঘরোয়া ক্রিকেটেও সুযোগ পাওয়া কঠিন।’ ফতুল্লায় পরের ম্যাচে কলবাগানের বিপক্ষে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন ইমতিয়াজ, করেছেন ৭৩ রান।
সেঞ্চুরির পর মাহবুবুল করিমের উচ্ছ্বাস। ছবি: প্রথম আলো২৪ এপ্রিল বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ভিক্টোরিয়ার শ্বাসরুদ্ধকর ‘টাই’ ম্যাচে আল আমিন জুনিয়র করেছেন ১০২ রান। লিস্ট ‘এ’–তে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি। ম্যাচসেরাও তিনি। তবে শেষ বলে দুর্দান্ত ছক্কায় ‘টাই’ করে আল আমিনের আনন্দ কেড়ে নিয়েছেন রূপগঞ্জের তাইজুল ইসলাম।
সেঞ্চুরি বিফলে গেছে সাইফ-সালমানের। ছবি: প্রথম আলোকাল মিরপুরে আবাহনীর দেওয়া ২৮৮ রান তাড়া করতে নেমে শেখ জামাল ধানমন্ডির ওপেনার মাহবুবুল করিম ১১০ বলে ১৩০ রান করে দলকে এনে দিয়েছেন দারুণ সূচনা। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তিনি সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০০৪-০৫ মৌসুমে কলাবাগানের হয়ে। যদিও মাহবুবুল সেঞ্চুরির চেয়েও এখন আলোচনায় মুক্তার আলীর শেষ বলে জয় এনে দেওয়া ছক্কা।
এই সেঞ্চুরিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আফসোস হতে পারে সিসিএসের সাইফ হাসান ও সালমান হোসেনের। বিকেএসপিতে কাল প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে দুজনের সেঞ্চুরি গেছে বিফলে। ম্যাচসেরা হওয়ার আনন্দ তাই উপভোগ করতে পারেননি সালমান, ‘প্রতিপক্ষ অনেক শক্তিশালী আর লিস্ট ‘‘এ’’-তে আমার প্রথম সেঞ্চুরি। ভালোই লাগছে। তবে জিততে না পারায় কষ্টটা বেশি লাগছে।’
তারকা খেলোয়াড়দের মধ্যে কলবাগান ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে নাসির হোসেনের ৯৭, শেখ জামালের সঙ্গে তামিম ইকবাল আউট হয়েছেন ৯০ রান করে। তারকাদের ভিড়ে আলো কেড়ে নেওয়ার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন প্রচারের আলোর বাইরে থাকা ব্যাটসম্যানরা। ঢাকা লিগের গুরুত্ব তো এখানেই।