শেষ বল করতে তেড়েফুঁড়ে এলেন তাসকিন আহমেদ। বলটি কোথায় পড়ল ঠিক বুঝে ওঠার আগেই সর্বশক্তিতে হাঁকালেন মুক্তার আলী, বলের শরীরে যেন গজাল ডানা। উড়তে থাকা সেই বলের যখন মাটিতে নামার ইচ্ছে হলো, ততক্ষণে মাঠের এক প্রান্তে উদ্দাম উচ্ছ্বাস, আরেক প্রান্তে শুধুই হতাশা।
অবিশ্বাস আর হতাশায় সেদিকে চেয়ে রইলেন তাসকিন। আরেকটি অবিশ্বাস্য সমাপ্তি দেখল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। এবার শেষ বলের ছক্কায় ম্যাচ জিতে গেল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
শেষ ওভারটি শুরুই হয়েছিল অনেক নাটকীয়তা দিয়ে। ৬ বলে ৭ রান দরকার, হাতে আছে ৬ উইকেট। এ ম্যাচ তো শেখ জামালই জিততে যাচ্ছে। বিশেষ করে বল যখন তাসকিনের হাতে—আগের ৮ ওভারে ঠিক ৭ রান রেটে ৫৬ রান দিয়ে যিনি উইকেটশূন্য। কিন্তু প্রথম বলেই রান আউট অ্যাঞ্জেলো পেরেরা।
নাটক জমল দ্বিতীয় বলে। আগের ওভারে একটি করে চার ও ছয়ে জয় হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা নাজমুস সাদাত তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন। পরের তিন বলে এল মাত্র দুই রান। শেষ বলে দরকার ৫ রান, টাই করতেও চাই ৪। কিন্তু মুক্তার কোনো ঝুঁকি নিলেন না, একেবারে ছক্কা!
স্থানীয় ক্রিকেটে ছক্কা মারার জন্য এমনিতেই ভালো নামডাক আছে মুক্তারের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে ১৬টি ছক্কা মেরে একসময় বিশ্বরেকর্ডও গড়েছিলেন। আজ সেই ছক্কা মারার ক্ষমতাই কাজে লাগল শেখ জামালের।
ম্যাচটি যে এমন উত্তেজনা ছড়াবে তা কে জানত? আবাহনীর ২৮৭ রানের লক্ষ্যকে যে একেবারে হাতের নাগালে নিয়ে এসেছিলেন মাহবুবুল করিম। তাঁর ১১০ বলে ১৩০ রানের ইনিংসে একপর্যায়ে জয়ের জন্য শেখ জামালের দরকার ছিল ৭৪ বলে ৭১ রান। কিন্তু মাহবুবুল আউট হওয়ার পরই খেলায় ফিরে আসে আবাহনী। ম্যাচও গড়ায় শেষ বল পর্যন্ত। কিন্তু একজন মুক্তার আলী যে অপেক্ষা করছিলেন তাদের জন্য, তা কে জানত!
দুদিন আগে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ ও ভিক্টোরিয়া ম্যাচেও শেষ বলে ছক্কা হয়েছিল। সেবার অবশ্য ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ টাই করিয়েছিলেন রূপগঞ্জের তাইজুল।