ছবি কথা বলে:সেসব দিন আর নেই। সত্তর-আশির দশকে হলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম রণক্ষেত্রে পরিণত হতো কাল, প্রিয় দলের ন্যায্য গোলবঞ্চিত হওয়া বলে কথা! সানডে চিজোবার শট ক্রসবারে লেগে গোললাইন অতিক্রম করলেও রেফারি গোল দেননি, তাতে আরামবাগের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে আবাহনীকে। ছবি : মীর ফরিদ
অ- অ অ+
মোহামেডান এখন এমনই। শক্তি-সামর্থ্যে মাঝারি দলের কাতারে নেমে গেলেও জার্সির ভারেই কিনা হঠাৎ হঠাৎ বড় দলগুলোও চূর্ণ হয়ে যায় তাদের সামনে। কাল যেমন নতুন শক্তি হয়ে দাঁড়ানো চট্টগ্রাম আবাহনী চূর্ণ হয়ে গেল জসিম উদ্দিন জোসির দলের সামনে। ৫-১ গোলের স্কোরলাইনই বলছে মাঠে কতটা দাপট দেখিয়েছে সাদা-কালোরা। দিনের আরেক ম্যাচে ঢাকা আবাহনীর সামনে ততটা না হলেও সমীহ জাগানিয়া ফুটবলই উপহার দিয়েছে আরেক সাদা-কালো দল আরামবাগ। গোলশূন্য ড্রয়ে ১ পয়েন্ট তুলে নিয়েছে তারা শিরোপাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে।
চার ম্যাচে মোহামেডানের কাল এটি দ্বিতীয় জয়। তাতেও সেমিফাইনালের পথ সহজ হচ্ছে না তাদের। কারণ আগেই তিন ম্যাচ জিতে ফেলেছে শেখ জামাল, মুক্তিযোদ্ধা ও চট্টগ্রাম আবাহনী। মোহামেডান আগের ম্যাচে ভালো খেলেও হেরেছে মুক্তিযোদ্ধার কাছে। কাল সেই ম্যাচের ছন্দটা ধরে রেখেই তারা শুরু করেছিল। ইসমাইল বাঙ্গুরা আবারও এক অসাধারণ হেডে ম্যাচে গোলের খাতা খুলে ফেলেছেন, এরপর তাঁরই পাসে বিপলু আহমেদ করেছেন ২-০। চট্টগ্রাম আবাহনীও খেলছিল আক্রমণাত্মক ফুটবল। তাতেই মোহামেডানের তরুণ দল গতি আর বোঝাপড়া কাজে লাগিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করে ফেলে। প্রথমার্ধেই চট্টগ্রাম আবাহনী অবশ্য এক গোল শোধ করে লিওনেল প্রেক্সকে ফাউল করে মোহামেডান দিদারুল আলম পেনাল্টি উপহার দিলে। স্পটকিকে ব্যবধান কমিয়েছেন জাহিদ হোসেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তারা সেখান থেকে লড়াইয়ে ফিরবে কি বাঙ্গুরার আরেক গোলে আরো অগোছালো হয়ে পড়ে তারা। মোহামেডানকে ততক্ষণে গোলের নেশায় পেয়েছে। মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া মাঝমাঠ থেকে চারজনকে কাটিয়ে ১ গোল করে সবাই তাক লাগিয়ে দেন। বদলি নামা ইউসুফ সিফাতও বাদ যাননি, শেষ দিকে তাঁর গোলেই স্কোরলাইন ৫-১।
আরামবাগ-আবাহনী ম্যাচে নাটকীয়তা কম হয়নি। আগের ম্যাচে আবাহনীকে ৫-১ গোলে জেতানোর নায়ক লি টাক এদিন প্রথমার্ধেই লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে। আরামবাগের ডিফেন্সিভ ফুটবলে অতিষ্ঠ হয়ে কিংবা গোল না পাওয়ার হতাশা থেকে আবু সুফিয়ানকে অফ দ্য বল লাথি চালালে এই ইংলিশ স্ট্রাইকারকে আর মাঠে রাখেননি রেফারি। ১০ জনের দলের বিপক্ষে আরামবাগও পরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। তবে গোল পেতে আবাহনীও ছিল মরিয়া।
ম্যাচের ৫৮ মিনিটে জুয়েল রানা সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। এর পরপরই সানডে চিজোবার ফ্রিকিক ক্রসবার ছুঁয়ে গোললাইন পার হলেও রেফারি সেটি এড়িয়ে গেছেন। ফলে ড্রয়ের দিকে গড়াতে থাকে ম্যাচ, শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছে। দুই ম্যাচ হাতে রেখে এখনো অবশ্য সেমিফাইনালে যাওয়ার ভালোই সম্ভাবনা আছে আকাশি-নীলের। তবে পরের ম্যাচে রহমতগঞ্জের কাছে আবারও অঘটনের শিকার হলে সমীকরণটা কঠিনই হয়ে যাবে তাদের।