টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলে গেছে পেছনের পাতায়। সব ভুলে অনেকেই এখন মজেছেন আইপিএলে। তবে সাকিব আল হাসানের পিছু ছাড়ছে না সদ্য সমাপ্ত এই টুর্নামেন্ট।
আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে ইডেন গার্ডেনে কত ম্যাচই তো খেলেছেন সাকিব। এখানে তাঁর রঙিন স্মৃতিও কম নয়। কিন্তু বাংলাদেশ দলের হয়ে যে দুটি ম্যাচ খেললেন ক্রিকেটের বিখ্যাত মাঠটিতে, দুটিই তাঁর কাছে দুঃখের কারণ হয়ে থাকল। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে বাংলাদেশ হেরেছে বড় ব্যবধানে। আইপিএল উৎসবে এসেও সাকিবকে পোড়াচ্ছে ওই পরাজয়, ‘হারগুলো আমাদের জন্য হতাশার। আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু ফলটা আমাদের পক্ষে আসেনি। তবে আমরা যে একেবারে খারাপ ক্রিকেট খেলেছি, তা নয়। ছোট ছোট ভুল না হলে দু-একটি ম্যাচ জিততে পারতাম।’
পেছনের হতাশা ভুলে কলকাতার হয়ে এবার ইডেনে রাঙাতে চান সাকিব। কাল কলকাতায় কেকেআরের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘কেকেআরের হয়ে ইডেনে খেলা আমার জন্য বড় গর্বের ব্যাপার। গত কয়েক বছরে এখানে যেভাবে খেলেছি তাতে সন্তুষ্ট। চেষ্টা করব এবার যেন দলে আরও বেশি অবদান রাখতে পারি।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে ৮-৯ দিনের ছুটি কাটিয়েই আইপিএল খেলতে ছুটতে হয়েছে ভারতে। ছুটিটা সাকিবের খুব কাজে লেগেছে, ‘যারা ফাইনালে খেলেছে, তাদের জন্য কষ্ট বেশি। কিন্তু আমাদের খেলা তো ২৬ মার্চ শেষ হয়ে গেছে। তারপর বেশ কিছুদিন ছুটি ছিল। আমি মনে করি, একজন খেলোয়াড়ের চনমনে হতে ৮-১০ দিন যথেষ্ট সময়।’
বেশির ভাগ সময়ই কলকাতার স্পিন আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন সুনীল নারাইন। গত নভেম্বরে সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের জন্য নিষিদ্ধ ক্যারিবীয় অফ স্পিনারের বোলিং অ্যাকশন কাল বৈধ ঘোষণা করেছে আইসিসি। কিন্তু অতীতে অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে অ্যাকশন শুধরে আসার পর বোলারের আগের ধার আর থাকে না। নারাইনের বোলিংয়েও আগের ধার থাকবে না, এমন আশঙ্কা থাকছে। আর এতে দলের স্পিন আক্রমণের নেতৃত্ব নেওয়ার সুযোগ সাকিবের সামনে। বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার বিনয়ের সঙ্গে নারাইনকেই বলছেন কেকেআরের স্পিনের নেতা, ‘নারাইনের মতো অসাধারণ বোলারের কাছে এটা কোনো ব্যাপার নয়। সে বিশ্বমানের বোলার। ওকে সবাই সেভাবেই সম্মান করে। এখনো বিশ্বাস করি, সে-ই নেতৃত্ব দেবে।’
২০১১ মৌসুমে আইপিএল অভিষেক হওয়ার পর থেকেই ধারাবাহিক ভালো খেলছেন সাকিব। আইপিএলে ৩২ ম্যাচে রান ৩৮৩, উইকেট ৩৮টি। কলকাতা যে দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, দুটিতেই রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ২০১২ সালে ৮ ম্যাচে ওভারপ্রতি ৬.৫০ রান দিয়ে নেন ১২ উইকেট। রান করেছিলেন ৯১। ২০১৪ আইপিএলে সাকিব আরও পরিণত, আরও উজ্জ্বল। ১৩ ম্যাচে ২২৭ রানের পাশে নেন ১১ উইকেট, কলকাতা শিরোপা জেতে আবার৷
এবার অতীতের সাফল্যকেও ছাড়িয়ে যেতে চান সাকিব।