gr8

ঘরের বাইরে যাওয়ার সময় কমবেশি মেকআপ ব্যবহার করা হয। খুব জমকালো সাজ না হলেও হালকা একটু কাজল, ঠোঁটে লিপস্টিক আর সঙ্গে ফেস পাউডার তো দেওয়াই হয়। সামান্য এই প্রসাধন ব্যবহারে ব্রণ কিংবা র‍্যাশের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর কারণ সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার না করা। আর এ জন্যই যত বিপত্তি। চাইলেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন সহজেই। কীভাবে? উপায়টা হলো মেকআপ তোলার অনুষঙ্গ বা মেকআপ রিমুভার কিট।
মেকআপ তোলার চল যখন থেকে
মেকআপ তোলার কথা বলতে গেলে শুরুটা করতে হবে প্রাচীন রোম থেকে। সেখানকার নারীরা মেকআপ তুলতে ব্যবহার করতেন মধু ও জলপাই তেল। প্রাচীন মিসরেও মধু ব্যবহারের প্রচলন ছিল। মিসরীয়রা মধুর সঙ্গে ব্যবহার করত নারকেল তেল। তারপর হাজার বছর পেরিয়ে এখন এসেছে আধুনিক সব মেকআপ রিমুভার কিট।
ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে
সবার ত্বকের ধরন এক নয়। শুষ্ক, তৈলাক্ত ও স্বাভাবিক—এ তিন ধরনের ত্বকই দেখা যায়। আবার কারও কারও ত্বক খুবই সংবেদনশীল হয়ে থাকে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী হতে হবে আপনার প্রসাধন তোলার উপকরণ। এমনটাই বললেন উইমেনস ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ফারনায আলম। তিনি জানান, ফাউন্ডেশন তোলার জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন জলপাই তেল, বেবি অয়েল কিংবা নারকেল তেল। শুষ্কতার সমস্যার জন্য চাইলে ময়েশ্চারাইজার লোশন বা ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের মেকআপ তুলতে উন্নত মানের কিট ব্যবহার করাই ভালো। যদিও মেকআপ তুলে ফেলার জন্য তৈলাক্ত ত্বকেও জলপাই তেল কিংবা ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করা যায়। সংবেদনশীল ত্বক থেকে মেকআপ তোলার পর বরফ ঘষে নেওয়া ভালো। এতে র‍্যাশের সমস্যা কমে যায়।

মেকআপ রিমুভার কিটের ধরন–ধারণ

চোখের মেকআপ তোলার জন্য আলাদাভাবে ‘আই মেকআপ রিমুভার’ পাওয়া যায়। ত্বকের কোনো ক্ষতি করা ছাড়াই এটি পানিরোধক কাজল কিংবা আইশ্যাডো তুলতে পারে। বাজারে নানা ব্র্যান্ডের আই মেকআপ রিমুভাল কিট পাওয়া যাবে। এর মধ্যে সেফোরা, নিউট্রোজেনা অয়েল ফ্রি, ম্যাবিলাইন আই এক্সপার্ট, অ্যালমেসহ বিভিন্ন মেকআপ কিট রয়েছে। মুখের বাকি অংশের মেকআপ তোলার জন্য রয়েছে নিউট্রোজেনা হাইড্রেটিং রিমুভার, ক্লিনিক, ক্যামোমাইল, ম্যাক ক্লিনস-অবসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রিমুভাল।

এ ছাড়া টোনার কিন্তু খুব ভালো মেকআপ রিমুভার হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে শুষ্ক ত্বকের জন্য এর জুড়ি মেলা ভার। মুখ ধুয়ে ফেলার পর তুলায় টোনার লাগিয়ে সারা মুখে মালিশ করে নিতে পারেন। এতে লোমকূপে জমে থাকা মেকআপ সহজেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

এই মেকআপ রিমুভার কিট পাওয়া যাবে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিংমল, সীমান্ত স্কয়ারসহ সুপারমলগুলোয়। আর অনলাইন দোকান থেকেও চাইলে আপনি সহজেই ফরমায়েশ করে নিতে পারেন।

দরদাম

ম্যাক, ক্যামোমাইল, ক্লিনিক, ম্যারি কে, ইয়োঙ্কা ব্র্যান্ডের মেকআপ রিমুভার কিটের দাম পড়বে ৪৫০ টাকা থেকে ২ হাজারের মধ্যে। আর নিউট্রোজেনাসহ যেকোনো হাইড্রেটেড মেকআপ রিমুভারের দাম পরবে ৩৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা। এ ধরনের হাইড্রেটেড রিমুভারের টিস্যু কিংবা ছোট রুমালের মতো থাকে। যা আপনি শুধু একবারই ব্যবহার করতে পারবেন। টোনারের দাম পড়বে ২০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত।

প্রাকৃতিক উপকরণ

মেকআপ তোলার জন্য ঘরোয়া রিমুভার কিটও ব্যবহার করা যায়। এগুলো মূলত প্রাকৃতিক উপাদান বলে সংবেদনশীল ত্বকেও কোনো ক্ষতি হয় না।

*বিভিন্ন ধরনের তেল ও ময়েশ্চারাইজার

নারকেল কিংবা বাদাম, জলপাই তেল তুলায় নিয়ে মালিশ করে মেকআপ পরিষ্কার করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বক যাঁদের, তাঁরা চাইলে তেলের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ পানি তুলায় মিশিয়ে নিতে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন ময়েশ্চারাইজার জাতীয় লোশন কিংবা ক্রিম। চোখের চারপাশে আই ক্রিম মালিশ করতে পারেন। এটি আপনার চোখের চারপাশের কালো দাগ ও ভাঁজ পরে যাওয়া থেকে সুরক্ষা দেবে।

*দুধ ও শসা

ত্বকের যেকোনো সমস্যায় শসা খুবই উপকারী। শসার রস মূলত ত্বকে জমে থাকা ধুলোবালি, মৃত কোষ পরিষ্কার করে ফেলে দ্রুত। তাই মেকআপ তুলতে আপনি চাইলে শসার রস ব্যবহার করতে পারেন। যাদের ত্বকে শুষ্কতার সমস্যা রয়েছে তারা এর সঙ্গে অল্প পরিমাণে দুধ মিশিয়ে নিতে পারেন। শসার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিলে এটি ত্বকে টোনারের কাজ করবে।

*টকদই

টকদই দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহারেও ত্বকের মেকআপ পরিষ্কার হয়ে যায়। এর সঙ্গে ময়দা কিংবা চালের গুঁড়ো ও ১ চিমটি হলুদ মিশিয়ে নিলে র‍্যাশের সমস্যা কমে যায়।