gkuih
ওভারের তৃতীয় বলটি খারাপ ছিল না ওয়াহাব রিয়াজের। লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে গেলেন জস বাটলার। উল্লাস শুরু করতে না করতেই থামতে হলো রিয়াজকে। নো বল! আউট ভেবে বল আটকানোরও চেষ্টা করেনি কেউ, চার! পঞ্চম বলে ছক্কা মারলেন এউইন মরগান; ব্যস, ‘সেঞ্চুরি’ হয়ে গেল রিয়াজের! ওয়ানডে ইতিহাসের নবম বোলার হিসেবে এক শ রান দিলেন এই বাঁহাতি পেসার, পাকিস্তানের হয়ে এমন ‘কীর্তি’ এই প্রথম।

নিজের শেষ বলে মরগানের হাতে আরেকটি ছক্কা খেয়েছেন রিয়াজ, তাতে ১০ ওভার শেষে তাঁর বোলিং ফিগার দাঁড়াল ১০-০-১১০-০! মাত্র তিন রানের জন্য বিশ্ব রেকর্ড হলো না রিয়াজের। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ ওভারে ১১৩ রান দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন মিক লুইস। ওই বোলিংয়ের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই আর দেখা যায়নি এই অস্ট্রেলিয়ানকে। ওটাই ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে।
ওয়ানডেতে কোনো বোলারের রান দেওয়ার দিক দিয়ে ‘সেঞ্চুরি’ হয়েছে বহু আগে, সেই ১৯৮৩ সালে! এটা একমাত্র ঘটনাই হয়ে ছিল টি-টোয়েন্টি আসার আগপর্যন্ত। বাকি আটজন বোলার যে ১০০ রান দিয়েছেন টি-টোয়েন্টি শুরুর পর।
১৯৮৩ সালে ওভালের ওই ওয়ানডেটা খুব অদ্ভুত ছিল। নিউজিল্যান্ডের অন্য বোলারদের খুব একটা পিটুনির শিকার হতে হয়নি। সব ঝড় গিয়েছে মার্টিন স্নেডেন ও মার্টিন ক্রোর ওপর দিয়ে। ক্রো তো তবু ৬ ওভারে ৫১ দিয়ে পার পেয়েছেন। তখন ওয়ানডে হতো ৬০ ওভারের, একজন বোলার করতে পারতেন সর্বোচ্চ ১২ ওভার। স্নেডেন ১২ ওভারে ১০৫ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছিলেন। অথচ একই ইনিংসে রিচার্ড হ্যাডলি ১২ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ২৬ রান!
এরপর ২২ বছর আর কোনো বোলারকে এমন দুর্ভাগ্যের শিকার হতে হয়নি। লুইসই ছিলেন সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় বোলার। এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলেন রিয়াজ। এই ৯ জনের মধ্যে নিউজিল্যান্ড ও ভারতের আছে দুজন বোলার। আর অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের আছে একজন করে।
লুইস, স্নেডেন আর রিয়াজ ছাড়া বাকিরা হলেন ভুবনেশ্বর কুমার, ব্রায়ান ভিটোরি, টিম সাউদি, জেসন হোল্ডার, বিনয় কুমার ও দৌলত জাদরান। তবে হোল্ডার এঁদের মধ্যেও একটু ব্যতিক্রম। এই ৯ দুর্ভাগার মধ্যে একমাত্র অধিনায়ক তিনি। গত বিশ্বকাপে এবি ডি ভিলিয়ার্সের বেদম প্রহারের মুখে পরে ১০ ওভারে ১০৪ রান দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। বাকিরা তবু অজুহাত দিতে পারে, ক্যাপটেন আমাকে সরিয়ে নিল না কেন? বারবার আমাকেই কেন দিচ্ছিল বল? হোল্ডারের কিন্তু সেই সুযোগ নেই।
একটুর জন্য এই তালিকায় নাম লেখানো থেকে বেঁচে গেছেন সর্বকালের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী মুত্তিয়া মুরালিধরন। সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক ওয়ানডেতে ৯৯ রান দিয়েছিলেন মুরালি। বাংলাদেশের শফিউল ইসলামও দুবার বেঁচে গেছেন ‘সেঞ্চুরি’র হাত থেকে। ২০১০ সালে জুন মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ ওভারে ৯৫ রান দিয়েছিলেন বাংলাদেশি পেসার। এর ঠিক ৩ সপ্তাহ পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভারে ৯৭ রান দিয়েছিলেন শফিউল! ভাগ্যিস বাকি ওভারটি করতে হয়নি তাঁকে!