huk
জলে চুন তাজা, তেলে চুল তাজা—এ বাক্য দ্রুত কে কয়বার বলতে পারে তা নিয়ে ছিল এক খেলা। ছোটবেলার এই অভিজ্ঞতা অনেকেরই রয়েছে। তবে এই প্রবাদের কথাটা সত্যি। চুল সুন্দর রাখতে তেলের জুড়ি মেলা ভার। শুধুই কি কেশচর্চা? ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে বা অটুট রাখতেও তেল অনন্য। সৌন্দর্যচর্চায় নানা রকম তেল ব্যবহার করা হয় বহুকাল আগে থেকেই।

কিছু তেল আছে যেগুলো সব সময়ই বেশ পরিচিত ও কার্যকরী। এগুলো হলো নারকেল তেল, তিলের তেল, কাঠবাদাম তেল, জলপাই তেল, চা-পাতার তেল ইত্যাদি। এই তেলগুলোর একেকটির একেক গুণ।

কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়, ত্বকের যত্ন নিতে হয় সারা বছরই। এই তেলগুলোর কোনোটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে, কোনোটি রুক্ষতা দূর করে আবার কোনোটি নানা সমস্যা দূর করে। এমনটাই জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন। তিনি বলেন, ‘কোন তেল কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, তা জানতে হবে। প্রতিটি তেলের ভিন্নতা রয়েছে। তাই সব তেল একভাবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’

নারকেল তেল

অনেক আগে থেকেই চুল ও রূপচর্চায় নারকেল তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেকেই শুধু চুলের জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু ত্বকের জন্যও নারকেল তেল বেশ উপকারী। চুলের রুক্ষতা ও খুশকি দূর করার পাশাপাশি ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখতে নারকেল তেলের জুড়ি নেই। এই তেল ত্বকের আর্দ্র ভাব ধরে রাখে ও ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
কাঠবাদাম বা অ্যামন্ড তেল
কাঠবাদামের তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। এটি ত্বকের ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয়। আর সব ধরনের ত্বকেই সহজে ব্যবহার করা যায় কাঠবাদামের তেল।
উপকারিতা:
* ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
* ত্বকের গভীরে গিয়ে পুষ্টি জোগায়।

* ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায়।
* বয়সের দাগ-ছোপ রোধ করে।

* চোখের নিচের কালি বা ডার্ক সার্কেল হালকা করে।
* ত্বকের রুক্ষতা দূর করে কোমল ও মসৃণ করে তোলে।

ত্বক ও চুলের যত্নে সহায়তা করবে নানা ধরনের তেলজলপাই তেল বা অলিভ অয়েল
ত্বক ও চুলের যত্নে জলপাই তেল বেশ উপকারী। এটি বেশ জনপ্রিয়ও। জলপাইয়ের তেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে ও ত্বকে ময়লা জমতে দেয় না। ত্বক ফেটে গেলে তা সারিয়ে তুলতে জলপাই তেল বেশ কার্যকরী।
চা-পাতা বা টি ট্রি অয়েল
আজকাল এই তেল প্রসাধনী থেকে শুরু করে ত্বকের চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হচ্ছে। পোকামাকড়ের কামড়ে জ্বালাপোড়া, হালকা কাটা-ছেঁড়ায় টি ট্রি অয়েল অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। তৈলাক্ত ত্বকে যেকোনো তেল ব্যবহারের আগে অনেক কিছুই ভেবে নিতে হয়। কারণ তেলের ব্যবহার ব্রণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। তৈলাক্ত ত্বকের এসব সমস্যার সমাধান চা-পাতার তেল।
নিম তেল
এই তেল প্রাকৃতিকভাবেই ত্বককে সুরক্ষা দেয়। ত্বকে একধরনের আর্দ্রতা নিয়ে আসে। এটি বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে ত্বকের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এ তেল নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের নানা সমস্যা দূর হয়। কাজেই ত্বকের সুরক্ষায় নিয়মিত নিম তেল ব্যবহারের চেষ্টা করতে পারেন।

সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখীর তেল ভিটামিন এ, সি, ডি এবং ই-এর সমৃদ্ধ উৎস। এই উপাদানগুলোর কারণে তেলটি ত্বক ও চুলের জন্য অনেক ভালো। এটি শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা নিয়ে আসে। একই সঙ্গে তেলটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ত্বককে নানা সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে। যাদের ঠান্ডার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য বেশ ভালো এই তেল।

ক্যাস্টর অয়েল

ক্যাস্টর অয়েল চুল শক্ত ও মজবুত করার পাশাপাশি চুল পড়াও রোধ করে। তবে এই তেলের ব্যবহারবিধি মেনেই তা চুলে দিতে হবে। ক্যাস্টর অয়েল কিছুটা ভারী হয়ে থাকে, তাই অবশ্যই অন্য তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। ক্যাস্টর অয়েল যদি সরাসরি চুলে ব্যবহার করা হয় তবে চুল আঠালো হয়ে যাবে এবং চুল পড়বে। তাই অবশ্যই অন্য তেল মিশিয়েই তা চুলে ব্যবহার করতে হবে।

যেখানে পাবেন

যেকোনো শপিং মল কিংবা সুপার শপ থেকে কিনতে পারবেন এই তেলগুলো। যেমন: বসুন্ধরা সিটি, আলমাস সুপার শপ, আগোরা, নন্দন, মীনা বাজার, গাউছিয়া এবং গুলশান ডিসিসি মার্কেট, ঢালি সুপার মার্কেট, ল্যাভেন্ডারসহ আরও অনেক বিপণিবিতানে পাওয়া যাবে এই তেলগুলো।