হ্যালোটুডে ডটকম: কুমিল্লার সিটি করপোরেশন এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী দুই সৎ ভাইকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হবিগঞ্জের বাহুবলে পঞ্চায়েতের বিরোধ নিয়ে চার স্কুলছাত্রকে হত্যায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের মধ্যে খুন হল দুই শিশু।
শনিবার বিকালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ঢুলিপাড়ার একটি বাড়ি থেকে জয় (৭) ও মণি (৫) নামে এই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয় বলে ইপিজেড ফাঁড়ির এসআই আজিজুল হক জানান।
জয় শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকার হলিচাইল্ড স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। মণি ওই স্কুলের নার্সারির ছাত্র।
দুই শিশু ঢুলিপাড়ার মুদি দোকানি আবুল কালামের দ্বিতীয় স্ত্রী রেখা আক্তারের ছেলে। তার বড় স্ত্রী রোকেয়া বেগমের ছেলে মেহেদী আল ছোটন (২১) ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তার দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। মেহেদীই দুই শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে সন্দেহ পুলিশের।
ঢুলিপাড়ার ওই বাড়িতে কালামের দ্বিতীয় স্ত্রী রেখা এবং তার এক মেয়ে (দশম শ্রেণি পড়ুয়া) ও দুই ছেলের সঙ্গেই রোকেয়া বেগম থাকতেন।
পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত বলে এসআই আজিজুল জানান।
তিনি বলেন, “এ বিবাদের জের ধরে কালামের প্রথম স্ত্রীর ছেলে মেহেদী উত্তেজিত হয়ে জয় ও মণিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির এমবিএর ছাত্র মেহেদী ঢাকায় হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করেন। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে আসেন। ঘটনার পর থেকে তার খোঁজ মিলছে না।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আবদুল্লাহ আল মামুন পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
খুনি ধরতে চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে বলে আশা করছি।”
দুই ভাইয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ মর্গে নেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে একের পর এক শিশু নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে কোথাও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে মামলা নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা থেকে।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে শিশু সামিউল ইসলাম রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন। ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তারা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
রাজন হত্যার পর মাস না পেরোতেই খুলনায় একটি গ্যারেজে মলদ্বার দিয়ে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় মো. রাকিব নামে ১২ বছর বয়সী আরেক শিশুকে।
পরদিন বরগুনার তালতলী উপজেলায় মাছ চুরির অভিযোগে রবিউল আউয়াল নামে ১০ বছরের এক শিশুকে শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া যায়।
সর্বশেষ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় বিল এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় চার শিশুর লাশ পাওয়া যায়, যারা পাঁচ দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিল।
পঞ্চায়েতের বিরোধের জের ধরেই ওই চার শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয় বলে গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে।