আদালতের নির্দেশে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে।
বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন নাহারের উপস্থিতিতে মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কবরস্থান থেকে তার লাশ তোলা হয়।
গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় নিজের বাড়ির কয়েকশ গজের মধ্যে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুর লাশ পাওয়া যায়। তখন ময়নাতদন্তের পর তনুকে তার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুরে দাফন করা হয়।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ মো. আবিদ হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে আসা সিআইডির কর্মকর্তারা আসার পর বেলা পৌনে ১২টার দিকে তনুর লাশ উত্তোলনের পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
দুপুরে এসপি কার্যালয়ে লাশ উত্তোলনসহ সামগ্রিক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও জানান তিনি।
লাশ উত্তোলনের সময় তনুর বাবা মো. ইয়ার হোসেন, কুমিল্লার এসপি শাহ মো. আবিদ হোসেন ও সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম খানসহ গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশজুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যেও খুনি শনাক্ত ও গ্রেপ্তার না হওয়ায় গত শুক্রবার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিবিকে।
সোমবার ডিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তে পুনরায় ময়নাতদন্ত করতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের আদেশ দেয় কুমিল্লার একটি আদালত।
তনু হত্যার ঘটনায় তার বাবা ক্যান্টনবোর্ডের কর্মচারী ইয়ার আলীর মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এক সপ্তাহ পর ডিবিতে তা স্থানান্তর হয়। এখন তদন্তের ভার চেপেছে সিআইডির উপর।
খুনের আগে তনুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া না যাওয়ায় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। তবে তা নিশ্চিত হতে আরও পরীক্ষা করতে হবে।
সোমবার বিকালে তনুর পোশাকসহ পাওয়া কিছু আলামত পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয় বলে কুমিল্লা ডিবির ওসি মনজুর আলম জানান।
এদিকে, তনু হত্যার বিচার দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চ বুধবার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক ঘণ্টা ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগামী রোববার সারাদেশে ছাত্র ধর্মঘট ডেকেছে।
সেনানিবাসে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় তার সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে অনেকের পক্ষ থেকে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছে; যদিও সেনা কর্তৃপক্ষ তদন্তে বেসামরিক প্রশাসনকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।