পাম চাষ করে বিপাকে পড়েছেন ঝিনাইদহের পাম চাষীরা। প্রায় ৭/৮ বছর আগে লাগানো পাম গা গুলোতে এখন ফল আসতে শুরু করেছে। কিন্তু পাম ফল কোথায় বিক্রি করবেন বা কিভাবে তেল তৈরি করবেন তা জানা নেই চাষিদের। পাামফল বিক্রি বা তেল তৈরি করতে না পারায় গাছেই ফলগুলো নষ্ট হচ্ছে।
ঝিনাইদহের বাজার গোপালপুর গ্রামের পূর্ব পাড়ার পাম চাষী আব্দুল লতিফ জানান, ২০০৭/৮ সালের দিকে আমি প্রায় দু’বিঘা জমিতে সাড়ে ৩শটি পাম গাছের চারা রোপণ করি। এখানে প্রায় আমার ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়। পাম গাছ গুলোতে গত দু’বছর ফল আসতে শুরু হয়েছে। কিন্তু কোথায় বিক্রি করতে হবে নানা স্থানে খোঁজ খবর নিয়েও বিক্রির জায়গা পাচ্ছি না।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গোলক নগর গ্রামের পাম চাষী মোকাদ্দেস হোসেন জানান, আমি বাড়ি পাশের জমিতে পামচারা রোপণ করেছিলাম। গাছগুলোতে পাম ফল আসতে শুরু করেছে। কিন্তু কি ভাবে এবং কোথা থেকে এই পাম ফল দিয়ে তেল তৈরি করা যাবে সেই বিষয়ে কোন তথ্য পাচ্ছিরাম না। এ কারণে বর্তমানে ঘরোয়া পদ্ধতিতে আমি পাম তেল তৈরি শুরু করেছি।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে পাম তেল তৈরি সম্পর্কে তিনি জানান, প্রথমে গাছ থেকে পাকা পাম ফল সংগ্রহ করেন তিনি। পরে সে ফল কাধি থেকে ছাড়িয়ে পেশারকুকারে দিয়ে ভাল ভাবে সিদ্ধো করা হয়। সেই সিদ্ধো পাম ফল পরে কড়াইয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিলে তা থেকে পাম তেল বেরিয়ে আসে। যা সংরক্ষণ করে তিনি পরে রান্নার কাজে ব্যবহার করেন।
তিনি আরো বলেন, সরকার যদি এই পাম থেকে তেল উৎপাদনের ব্যবস্থা করে দেন। তাহলে এই পাম দিয়ে আমাদের দেশে তেলে চাহিদা পূর্ন করা সম্ভব। কিন্তু তেলে তৈরি উপায় না থাকাতে চাষীরা অনেকই পাম চাষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৭/০৮ সালে ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারী পাড়ায় ‘তুর ডেভোলপমেন্ট’ নামের একটি কোম্পানি অফিস খুলে বসেন। তারা মাঠ পর্যায়ে আকর্ষণীয় বেতন ভাতার প্রলোভন দেখিয়ে কর্মী নিয়োগ দেন। এক পর্যায়ে ‘তুর ডেভোলপমেন্ট’ কোম্পানি অফিস গুটিয়ে নিয়ে চলে গেছে বলে পাম চাষীরা জানান। বন্ধ হয়ে যায় পাম চাষীদের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগ। এখন গাছগুলোতে পাম ফল আসতে শুরু করেছে। কিন্তু বিক্রি বা তেল উৎপাদনে কোন জায়গা না পেয়ে পাম চাষীরা পড়েছেন বিপাকে।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের কৃষি বিভাগে উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আকরামুল হক জানান, মেহেরপুর বিসিকে একটা মেশিন আছে। তবে সেখানে যে পরিমাণ পাম ফল দরকার তা সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। যে কারণে অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকে।
তিনি আরও জানান, এখানে পাম ফল থেকে যে তেল উৎপাদন হয় তা পরিশোধনে একটু সমস্যা আছে।