কেউ চোখ সাজাতে পছন্দ করেন, কেউ পছন্দ করেন ঠোঁট রাঙাতে। চোখ ও ঠোঁটের সঠিক সাজ চেহারায় নিয়ে আসে ভিন্নতা। বেঠিকভাবে ব্যবহার নিয়ে আসবে উল্টো ফল। লিপস্টিক ও কাজল লাগানোর ক্ষেত্রে অনেকে অনেক রকম সমস্যায় পড়ে থাকেন। সমস্যাগুলো এড়িয়ে সুন্দর করে ঠোঁট রাঙানো, চোখ সাজানোর পরামর্শ দিলেন রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা শাকিল।
চোখ ও ঠোঁট সাজাতে দরকার ভালো মানের প্রসাধনী মডেল: মাহি ছবি: নকশামুখের ত্বকের মতো ঠোঁটেরও চাই বিশেষ যত্ন। অনেক সময় ঠোঁট ফেটে যায়, মরা চামড়া হয়, ঠোঁটের উপরিভাগ খসখসে হয়ে যায়। ঠোঁটের মরা চামড়া পরিষ্কার রাখতে হবে এবং ময়েশ্চারাইজার বা লিপবাম ব্যবহার করে নরম রাখতে হবে। পরিষ্কার নরম ঠোঁটে ইচ্ছেমতো লিপস্টিক পরা যায়। লিপস্টিক পরার আগে চারপাশটা ভালো করে লিপলাইনার দিয়ে এঁকে নিতে হবে। তারপর লাইনের ভেতরের অংশে মাঝখান থেকে একটু একটু করে পুরো ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে নিন। এবার পাউডার হালকাভাবে চেপে চেপে লাগিয়ে নিলে আর ছড়িয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। দীর্ঘ সময় ধরে এটি স্থায়ী হবে।
গ্লসি বা ক্রিমি লিপস্টিক লাগানোর আগে ঠোঁটে একটু প্রাইমার, শ্যাডো বা ব্লাশনে লাল শেড তুলির মাথা দিয়ে চেপে চেপে লাগিয়ে নিলে ছড়িয়ে যাবে না। থাকবেও অনেকটা সময় ধরে। গাঢ় লিপস্টিক পরার ক্ষেত্রে ব্রাশ দিয়ে ঠোঁটে লাগালে নিখুঁত করে পরা যাবে। লিপস্টিক ব্যবহারের পর যদি তা গাঢ় হয়ে যায়, তাহলে ঠোঁটে একটা টিস্যু হালকা করে চেপে বাড়তি লিপস্টিক তুলে নিতে পারেন। প্রয়োজনে পরে আরেক টোন লিপস্টিক হালকা করে লাগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
লিপস্টিক পরার সময় মুখ ও ঠোঁটের আকৃতির ওপর খেয়াল রাখুন। তার ওপর নির্ভর করেই লিপস্টিক লাগাতে হবে। কারও ঠোঁট যদি চিকন বা পাতলা হয়, তাহলে লিপলাইনার দিয়ে একটু বড় করে এঁকে নিয়ে লিপস্টিক পরলে ভালো দেখাবে। আবার যদি কারও বড় বা মোটা হয়, সে ক্ষেত্রে ঠোঁট আঁকার সময় ছোট করে ও গোল আকারে এঁকে নিতে পারেন।
অনেকেই দিনের অনেকটা সময় লিপস্টিক পরে থাকেন। হতে পারে শখের বশে অথবা প্রয়োজনে। ফারজানা শাকিলের পরামর্শ হলো, বাড়িতে থাকার সময় বা প্রয়োজনের বাইরে ঠোঁটকে বিশ্রাম দিতে হবে। সারা দিন শেষে বাসায় ফিরে যত্নসহকারে লিপস্টিক তুলে ফেলতে হবে। সম্ভব হলে একটু বাড়তি যত্ন নিতে হবে। গোলাপ ফুলের পাপড়ি, দুধের সর আর মধু দিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে ১০ মিনিট ঠোঁটে রেখে তারপর ধুয়ে নিলে ঠোঁট কোমল ও মসৃণ থাকবে।
চোখের সাজে
চোখ সাজাতে কাজলের কোনো বিকল্প নেই। চোখে একটুখানি কাজলের ছোঁয়ায় সাজটা হয়ে ওঠে অনন্য। কিন্তু এখানেও রয়েছে ছড়িয়ে যাওয়ার ভয়। চোখের পাতা তৈলাক্ত হলে অথবা আইলাইনার ও কাজল পরার পরে পলক বেশি পড়লে কাজল ছড়িয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে কাজল দেওয়ার আগে ডার্ক ব্রাউন আইশ্যাডো লাগিয়ে নিয়ে কাজল পরলে ছড়িয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। কাজল দেওয়ার পর সামান্য পাউডার আইশ্যাডো ব্রাশে নিয়ে কাজলের ওপর চেপে লাগিয়ে নিলে চোখের পাতার অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ঝরঝরে রাখবে এবং কাজলকে দীর্ঘস্থায়ী করবে। খেয়াল রাখতে হবে কাজলটি তৈলাক্ত কি না। তৈলাক্ত কাজল দ্রুত ছড়ায়। এমন হলে কালো আইশ্যাডো লাগিয়ে নিলে তৈলাক্ত ভাব কেটে গিয়ে কাজলকে অনেক সময় ধরে রাখবে। সারা দিন শেষে চোখেরও চাই বিশেষ যত্ন। দিন শেষে ভালো করে তুলে ফেলতে হবে কাজল। তুলায় করে ভ্যাসিলিন, জলপাই তেল, জোজোবা তেলের যেকোনো একটির সাহায্যে কাজল পরিষ্কার করে নিতে পারেন। চোখের আরামের জন্য তুলা ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে চোখের ওপর রাখতে পারেন। চোখ সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকবে।
ফারজানা শাকিল মনে করেন, ভালো মানের পণ্য ব্যবহার করা উচিত। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এসব পণ্যে কিছু না কিছু কেমিক্যাল থাকে। ভালো পণ্য না হলে ত্বকে নানা রকম সমস্যা তৈরি হতে পারে। র্যাশ, ফুসকুড়ি, ইনফেকশনসহ নানা প্রকার ঘা হতে পারে। তাই বুঝেশুনে এসব পণ্য ব্যবহার করা উচিত।