প্রতিটি সম্পর্কই আবেগের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে আমরা নিজের অস্তিত্বই ভুলে যাই। ভালোবাসতে গিয়ে ব্যক্তিসত্তা বিসর্জন দিই। সে কারণে ভালোবাসার মানুষ চলে গেলে দিশেহারা হয়ে পড়ি। বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে না। তাই প্রতিটি মানুষের উচিত নিজের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা। সে ক্ষেত্রে শরীর ও মন—দুটির দিকেই সমান যত্নবান হতে হবে। তাতে করে নিজেকে কম কষ্ট দেওয়া হবে। আগে থেকে এই প্রস্তুতি নিলে জীবনের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। চাইলেও অনেক সময় কষ্টের মুহূর্তগুলো দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। সে কারণে নিজেকে সব সামলানোর সময় দিন। নিজের প্রতি প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিন। আপনার সমস্যাটি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করুন। এতে করে তারা বুঝতে পারবে। অযথা হয়তো বিরক্ত করবে না। এই ধাক্কা, এই কষ্ট সবাই তখন শ্রদ্ধার চোখে দেখবে। নিজের প্রতি যে খারাপ লাগা ছিল, তা কমে যাবে।
এটা সত্য যে বিশ্বাস আর ভালোবাসার সম্পর্ক হারিয়ে গেলে জীবনটাকে অর্থহীন মনে হয়। এই কষ্ট অবর্ণনীয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কষ্টের মাত্রা কমে আসে। তখন ভালোবাসা, নির্ভরশীলতা খোঁজে মানুষ। এ ক্ষেত্রে পরিবার, বন্ধুদের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। চেষ্টা করবেন নিজেকে ব্যস্ত রাখতে।
নিজের সমস্যাটি নিয়ে প্রথমেই উচিত কারও সঙ্গে আলোচনা করা। তাতে করে মনের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করা যেতে পারে। তবে ‘সুপ্রিম সাইক্রিয়াটিক ইমার্জেন্সি’ দেখা দিলে মনোরোগের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
আরও যা যা করতে পারেন
১. প্রথমেই উচিত চাপিয়ে না রেখে কারও সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা।
২. পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বড়। তারা বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা না করে তাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
৩. তার ভালো লাগার দিকে প্রাধান্য দিতে হবে। তাকে পুরোপুরি সমর্থন দিতে হবে।
৪. নিজের প্রতি খেয়াল রাখুন। পাশাপাশি নিজের জীবনকে ভালোবাসতে শিখুন।
৫. মানুষের মাঝে থাকার চেষ্টা করুন। পরিবারকে সময় দিন।
৬. বন্ধুদের সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি সময় কাটান।
৭. কোনো কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করুন।
৮. সিনেমা দেখতে যাওয়া, কেনাকাটা করা সম্ভব হলে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন।
৯. সম্ভব হলে কাজের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করুন। সময়ও কাটবে, কর্মজীবনও সফল হবে।
১০. আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না।