চোখের ফ্যাশনে লেন্সের ব্যবহার নতুন নয়। সব সময় চশমা পরতে পছন্দ করেন না অনেকেই। আবার পেশাগত প্রয়োজনেও কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে হয় কারও কারও। তবে সব সময় কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করা ঠিক নয়, এমনটাই বলেন বিশেষজ্ঞরা। কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে চাইলে সতর্ক থাকতে হবে কিছু বিষয়ে।
ইগোভিশন, ফ্রেশলুক, আই চয়েস, কমফোর্টসহ নানান ব্র্যান্ডের কন্টাক্ট লেন্স রয়েছে বাজারে। ধূসর, বাদামি, হ্যাজেল, অ্যাকুয়া, নীল, সবুজ রঙের লেন্স চলছে বেশ; এমনটাই জানালেন বিক্রেতারা। স্বচ্ছ লেন্সেরও চাহিদা রয়েছে। স্বচ্ছ কিংবা রঙিন—যেকোনোটির মধ্যেই পাবেন কসমেটিক লেন্স (পাওয়ারবিহীন) বা পাওয়ার লেন্স।
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে আই ভিশনের বিক্রয় সহকারী মোহাম্মদ রনি জানালেন কন্টাক্ট লেন্সের যত্নআত্তির ব্যাপারে
* নির্দিষ্ট দ্রবণের মধ্যে কন্টাক্ট লেন্স সংরক্ষণ করতে হবে। এতে লেন্স ভালোমতো ভেজা থাকবে। কন্টাক্ট লেন্স কেনার সময়ই দ্রবণ ও লেন্স রাখার ছোট বক্স (ক্লিপ)সহ পুরো সেট কিনে নিতে পারেন। এর ফলে লেন্স সংরক্ষণ করতে সুবিধা হবে।
* দ্রবণটি ময়লা হয়ে গেলেই পরিবর্তন করে নিতে হবে। ময়লা দ্রবণে লেন্স রাখা যাবে না।
* দ্রবণের মেয়াদ তিন মাস। মেয়াদ পেরিয়ে গেলে দ্রবণ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
* কন্টাক্ট লেন্সেরও নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত মেয়াদের লেন্স কিনতে পাওয়া যায়। কেনার সময়ই লেন্সের মেয়াদ সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। মেয়াদোত্তীর্ণ লেন্স ব্যবহার করা যাবে না।
.ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের আবাসিক সার্জন নীহার আর রায় জানালেন, প্রয়োজন না পড়লে কন্টাক্ট লেন্স না পরাই ভালো। কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের কারণে চোখে নানান সমস্যা হতে পারে। কন্টাক্ট লেন্সের উপাদান থেকে অ্যালার্জি হতে পারে, চোখের কর্নিয়ায় মারাত্মক ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি চোখে ব্যথা ও জ্বালাযন্ত্রণা হওয়ার পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি হারানোর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তবু যদি কন্টাক্ট লেন্স পরতেই হয়, সে ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা প্রয়োজন। নীহার আর রায়ের কাছেই জেনে নেওয়া যাক
* শিশু ও বয়স্ক ছাড়া অন্যরা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। তবে কারও চোখের কর্নিয়ায় যদি কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে তিনি একেবারেই কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারবেন না।
* চোখে কন্টাক্ট লেন্স পরার আগে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। অসাবধানতাবশত কন্টাক্ট লেন্স হাত থেকে পড়ে গেলে কোনো অবস্থাতেই সেটি আর ব্যবহার করা যাবে না।
* চোখে যতটা কম সময় কন্টাক্ট লেন্স রাখা যায়, ততই ভালো। প্রয়োজন শেষেই কন্টাক্ট লেন্স খুলে রাখুন। একটানা পাঁচ-ছয় ঘণ্টার বেশি সময় কন্টাক্ট লেন্স না পরে থাকাই ভালো।
* যাঁদের স্বাভাবিকভাবেই পাওয়ার চশমা ব্যবহার করতে হয়, তাঁরা সেই অনুযায়ী পাওয়ারযুক্ত কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারবেন; তবে সেটিও যত দূর সম্ভব কম সময়ের জন্যই ব্যবহার করা উচিত।
* কন্টাক্ট লেন্স পরার পর হঠাৎ করে চোখ লাল হয়ে গেলে, চোখে জ্বালাযন্ত্রণা বা অস্বস্তিকর অনুভূতি হলে কিংবা চোখে অন্য যেকোনো অসুবিধা মনে হলে সঙ্গে সঙ্গেই কন্টাক্ট লেন্স খুলে ফেলুন। দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন। কোনো কারণে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে দেরি হলে চোখে পরিষ্কার পানি দিতে পারেন। তবে অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি যদি দেখতে অসুবিধা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রেও দেরি করা যাবে না।
.চোখে কন্টাক্ট লেন্স পরার আগে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবেকোথায় পাবেন
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, গুলশান, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে চশমার দোকানে পাবেন কন্টাক্ট লেন্স।
দরদাম
ব্র্যান্ড ও পাওয়ার ভেদে কন্টাক্ট লেন্সের দাম পড়বে ৪০০ থেকে ১৮০০ টাকা। দ্রবণ ও ক্লিপসহ পুরো সেট না কিনলে দাম একটু কম পড়বে। তবে পুরো সেটা কিনে নেওয়াটাই নিরাপদ।