সকালে ঘুম থেকে উঠেই অফিসে দৌড়। তাড়াহুড়োয় খাবার খাওয়ার সময় পেলেন না। অফিসে গিয়েই মিটিং। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল। তখনো খাবার খাওয়া হলো না। আবার রাতের খাবার যে কখন খাওয়া হয় তার কোনো সঠিক সময় নেই! সময়মতো খাবার না খেলে তৎক্ষণাৎ কোনো সমস্যা হয় না বলে অনেকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে অসুস্থ হতেই হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শারমিন রুমী আলীম জানালেন, সময়মতো না খাবার খাওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি হয় গ্যাসট্রিকের সমস্যা। বদহজম, গ্যাস ও অম্বল হওয়ার আশঙ্কা তো আছেই। সঠিক সময়ে সঠিক খাবার না খাওয়ার কারণে বয়স যখন ৪০ পেরিয়ে যায়, তখন তাঁদের শরীর খুব দ্রুত ভেঙে পড়ে। তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কমে যায়। দ্রুত বৃদ্ধ হয়ে
পড়েন তাঁরা।
অনিয়মিত খাবারদাবার ও বেশি রাত করে রাতের খাবার খাওয়া প্রভাব ফেলে আপনার নিত্যদিনের কাজেও। কারণ, সঠিক সময়ে খাবার না খেলে শরীর খুব দ্রুত পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। লো প্রেশারের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু খাবার সময়মতো খেয়ে ফেললে শরীর তরতাজা থাকে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বজায় থাকে। বেশির ভাগ তরুণ সকালবেলা খাবার খেতে আগ্রহী হন না। কিন্তু দিন যত গড়ায় শরীরের পরিপাক হারও তত বেড়ে যায়। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর পরিপাক হারও কমতে থাকে। ফলে দুপুর বা রাতের চেয়ে সকালে খাবারদাবার অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। সকালে নাশতা কখনোই বাদ দেওয়া উচিত নয়। সকালের খাবার যেমন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে বিরত রাখে, তেমনি সারা দিন কাজ করার শক্তি প্রদান করে। ছোট বয়স থেকেই সঠিক সময়ে খাবার খেলে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঠিকমতো হয়।
গবেষণা থেকে পাওয়া
* অক্সফোর্ড জার্নাল অনুসারে, কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী যদি তাঁর খাবার নিয়ম অনুসারে না খান, তাহলে তাঁর অনাগত সন্তানের ওপর এর নানা
প্রভাব পড়ে।
* চীনের মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক তাঁর গবেষণায় জানিয়েছেন, কখনোই একসঙ্গে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়৷ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া উচিত৷ সময়মতো খাবার খেলে হজম-প্রক্রিয়া ভালো হয়, যা স্বাস্থের জন্য ভালো৷
* যুক্তরাষ্ট্রের জীববিজ্ঞানী গিরিশ মেলকানি তাঁর এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, সময়মতো খাবার গ্রহণ করার ফলে কম বয়সে বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া ও হার্টের যে সমস্যা হয় তাও দূর হয়।
* বোস্টনের ব্রড ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সময়মতো খাবার খাওয়া আপনাকে গ্যাস্ট্রিক, আলসার, ওজনহীনতাসহ মারাত্মক কিছু রোগ থেকে রক্ষা করে আপনাকে রাখবে সুস্থ, সবল ও সতেজ।
বিষয়:
অধুনা পরামর্শ