রোদ থেকে বাসায় ফিরে এক গ্লাস ঠান্ডা জুস! আহ্ সে কী শান্তি! এই গরমে আরাম দেবে তাজা ফলের রস। আর তার জন্য ঘরে
থাকতে হবে একটি জুসার। তবে ব্লেন্ডারেও কাজ চলে। ফল থেকে রস বের করে নেওয়ার এই যন্ত্রটির চাহিদা বেড়ে যায় গরম এলেই।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ট্রান্সকম ডিজিটালের বিক্রয় নির্বাহী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘গরমের সময় এই ধরনের যন্ত্র বেশি বিক্রি হয়। তবে এবার বেশি চলছে একের মধ্যে অনেক সুবিধা আছে এমন যন্ত্রগুলো। যেমন ব্লেন্ডার। যেখানে জুস, মসলা, কিমার মতো বিষয়গুলো এক যন্ত্রেই সারা যায়।’
দামের ওপর নির্ভর করে লম্বা, গোলাকার ও নৌকার মতো বাঁকানো নকশার ব্লেন্ডার ও জুসার পাবেন। ম্যানুয়াল ও ডিজিটাল দুই ধরনের জুসারই আছে। ফিলিপসের মাল্টি-ইউজ ব্লেন্ডারে জুস করার জন্য ছাঁকনি ব্যবহারের সুবিধা আছে। এ ছাড়া কিমা ও আদা-রসুন বাটার জন্য আছে আলাদা প্যানেল। দেড় লিটারের মিয়াকোর ব্লেন্ডারে চারটি জার ব্যবহার করে চার ধরনের উপকরণ ব্লেন্ড করা যায়। প্রেস্টিজের স্টেইনলেস স্টিলের ব্লেড দেওয়া ব্লেন্ডারটিতে ভিন্ন তিনটি জার রয়েছে। লম্বা আকারের এই ব্লেন্ডারের ক্ষমতা আড়াই শ ওয়াট। এ ছাড়া নোভার তিনটি জারের প্লাস্টিক বডির ব্লেন্ডারও পাওয়া যাবে। এই ব্লেন্ডারগুলো দিয়ে ফলের রস তৈরি করা যায়। শুধু জুসের জন্য মিয়াকোর দুই চেম্বারের দুটি সেফটি লক ও স্টেইনলেস স্টিলের ব্লেডযুক্ত জুসার পাওয়া যাবে এবং এতে শক্ত ও নরম ফলের জন্য দুই ধরনের স্পিড মোড রয়েছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মধ্যে আরও আছে প্যানাসনিক, মলিনেক্স, সেবেক ইত্যাদি। এ ছাড়া প্লাস্টিকের বিভিন্ন নন-ব্র্যান্ডের ম্যানুয়াল জুসার রয়েছে বাজারে।
গরম যেহেতু বেশি, এসব যন্ত্রের ব্যবহারও হচ্ছে বেশি। তাই যন্ত্র ব্যবহারের আগে-পরে একটু যত্ন নিলে আপনার জুসার বা ব্লেন্ডারটি দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।
ব্লেন্ডার বা জুসারটি যে ব্র্যান্ডেরই হোক না কেন তার যত্ন কিন্তু চাই সঠিকভাবে। কীভাবে যত্ন নিলে ব্লেন্ডার বা জুসার যন্ত্রটি ভালো থাকবে সে সম্পর্কে রান্নাবিদ সিতারা ফিরদৌস বলেন, ‘জুসার বা ব্লেন্ডার যেহেতু বৈদ্যুতিক যন্ত্র, তাই খেয়াল রাখতে হবে যেন এর মোটরে পানি না ঢোকে। আবার একটানা অনেকক্ষণ ব্যবহার করলে মোটর পুড়ে যেতে পারে। তাই পাঁচ মিনিট ব্যবহারের পর একটু বিরতি দিতে হবে। আবার যেহেতু লোডশেডিং হয়, তাই ব্যবহারের পর প্লাগ খুলে রাখতে হবে। কারণ, তাতে মোটর ভালো থাকবে।’
বাজারে আছে নানারকম জুসার ও ব্লেন্ডার। ছবি: নকশাযেখানে পাবেন
জুসার ও ব্লেন্ডার পাওয়া যাবে রাজধানীর নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডের বিভিন্ন দোকানে। এ ছাড়া গুলশান ডিসিসি মার্কেটে, পল্টন ও গুলিস্তানের বিভিন্ন মার্কেটে ব্র্যান্ড, নন-ব্র্যান্ড—সবই মিলবে। ইলেকট্রনিকসের বিভিন্ন শোরুমে মিলবে জুসার ও ব্লেন্ডার। সিঙ্গার, ফিলিপস, ওয়ালটনের শোরুমে পাওয়া যাবে নানা ধরনের জুসার। তার পাশাপাশি নোভা, মিয়াকো, উসান, নোয়া, প্রেস্টিজের ব্লেন্ডার পাওয়া যাবে। আর নন-ব্র্যান্ড কিনতে চাইলে বিভিন্ন চীনা ও জাপানের জুসার ও ব্লেন্ডার রয়েছে দোকানগুলোতে। ব্র্যান্ডের জুসার কিনলে কয়েক বছরের ওয়ারেন্টিও পাওয়া যাবে। তবে যাঁরা ইলেকট্রিক যন্ত্র ব্যবহার করতে চান না, তাঁদের জন্য বাজারে ম্যানুয়াল জুসার রয়েছে। এসব জুসারের দাম পড়বে একটু কম।
দরদাম
বাজারে এখন ব্লেন্ডার বা জুসারের দাম একটু বাড়তি। ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডার বা জুসার ১ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে ওয়ারেন্টি পেতে হলে ২ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে কিনতে হবে। যদি নন-ব্র্যান্ড কিনতে চান তবে খরচ পড়বে ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা। বাজারে ম্যানুয়াল ব্লেন্ডার ও জুসার পাওয়া যায়। এর খরচ পড়বে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।