গরমে আর ক্লান্তিতে বাইরের খোলা খাবার ও পানীয় গ্রহণের হার বেড়ে যায়। তার ওপর গরমে সহজেই খাদ্যদ্রব্য দূষিত হয়। বাড়ে মাছি ও পোকামাকড়ের বিস্তার, যা রোগবালাই ছড়াতে সাহায্য করে। এসবের ফলে বাড়ে পানি ও খাবারবাহিত রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা হলো জন্ডিস।
পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায় হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাস। এই ভাইরাস দুটির কারণে সব বয়সের মানুষই জন্ডিসে আক্রান্ত হতে পারে। পানীয় ও খাবারের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে অসচেতনতাই জন্ডিসের জন্য মূলত দায়ী।
জন্ডিস থেকে বাঁচতে বিশেষ করে রাস্তার খোলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। খাবারে ধুলাবালি, মাছি ও তেলাপোকার মাধ্যমে জীবাণু ঢুকে যেতে পারে। তাই বাড়িতেও সব সময় খাবার ঢেকে রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পচা-বাসি খাবার খাওয়া চলবে না।
যেকোনো স্থানে পানি বা শরবত খাওয়ার আগে পানির উৎস ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। বাইরে বেরোনোর সময় খাবার ও পানি সঙ্গে নেওয়া উচিত। ফুটানো পানি বা টিউবওয়েলের নিরাপদ পানি পান করতে হবে। ফলমূল ও সবজি খাওয়ার আগে সেগুলোও ফুটানো পানি বা টিউবওয়েলের পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
খাবার খাওয়ার আগে যেমন সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, ঠিক তেমনি খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের সময়ও হাত ধুতে হবে। পানি ও খাবার রাখার পাত্রগুলোকেও রাখতে হবে পরিষ্কার। খাওয়ার পরে এঁটো থালাবাসন দীর্ঘ সময় ফেলে রাখা ঠিক নয়। খাওয়ার পরে বাসনগুলো পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, অন্যথায় মাছি আর তেলাপোকার মাধ্যমে জীবাণুর অনুপ্রবেশ হবে সেসবেও। তীব্র অরুচি, বমি ভাব বা বমি, জ্বর, সঙ্গে প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যাওয়া জন্ডিসের লক্ষণ। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ
মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল