ত্রিশের পর নারীদের ত্বকে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এ সময় প্রয়োজন হয় কিছু অতিরিক্ত যত্ন। নতুবা খুব দ্রুত ত্বকে পড়তে পারে বয়সের ছাপ।
তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। কিছুটা সময় আলাদা করে নিজের যত্ন নিলেই ধরে রাখা যাবে ত্বকের তারুণ্য।
রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে বয়সের সঙ্গে কীভাবে ত্বকের যত্ন নিলে তারুণ্য বজায় থাকবে দীর্ঘদিন তারই কিছু উপায় জানানো হয়।
এখানে ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের ত্বকের কিছু বিশেষ যত্নের বিষয় উল্লেখ করা হল।
– ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং, ত্বকের সুরক্ষায় যে কোনো বয়সের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। ত্রিশের পর এই ধাপগুলো আরও ভালোভাবে অনুসরণ করা উচিত। কারণ এই প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার করা হয়, যাতে করে ত্বক সুস্থ থাকবে।
– প্রসাধনী কেনার আগে তাতে থাকা উপাদানগুলো ত্বকের জন্য কতটা উপকারী তা যাচাই করে নিন। হারবাল হোক বা বাজারে প্রচলিত কেমিকেলে তৈরি প্রসাধনী, প্রতিটি পণ্য কেনার আগে ভালোভাবে যাচাই করে ত্বকের জন্য উপযোগী প্রসাধনী বেছে নিতে হবে। এতে করে অবাঞ্ছিত র্যাশ বা ত্বকের সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে। বিশেষত প্রসাধনীতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, গ্লাইকোলিক ইত্যাদি উপাদান থাকলে তা বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
– পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করবে দীর্ঘদিন পর্যন্ত। বাইরের যত্ন ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করলেও সুন্দর ত্বকের জন্য চাই ভিতর থেকে যত্ন। তাই সুস্থ ও সুন্দর ত্বক পেতে প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে এবং পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করতে হবে।
– ত্রিশের পর ভিটামিন সি ও ই সাপ্লিমেন্ট ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। এ উপাদানগুলো ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখে যা তরুণ ত্বকের মূল শর্ত।
– ত্বকের যত্নে ফেইস মাস্ক ব্যবহারের গুরুত্ব নতুন করে বলার কিছু নেই। ত্বকের বাইরের আস্তরণ সুস্থ রাখতে ফেইস মাস্ক জরুরি।
তবে কেমিকলযুক্ত মাস্ক ব্যবহার না করে ঘরোয়া উপাদানে তৈরি মাস্ক ব্যবহার ত্বকের জন্য বেশি উপকারী। যেমন, ত্বকে টক দই লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এছাড়া মধু, লেবু, বেসন, পাকাকলা, পেঁপে ইত্যাদিও ত্বকে মাস্ক হিসেবে ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে।
– ত্রিশের পর ত্বকের যত্নে নিয়ম করে ফেইশল করানো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়া হবে এবং নিজেই পরিবর্তণ লক্ষ করবেন।
– ওজন কমাতে এবং সুন্দর স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ একইভাবে ত্বকের জন্য উপকারী অভ্যাস এটি। নিয়মিত ৩০ মিনিটের ব্যায়াম ত্বক পরিষ্কার করে ত্বকে পুষ্টি যোগায় এবং রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। যা ত্বকের বয়সের কাটাকে ধীর করে দিতে কার্যকর।
– ত্বকের উপরের স্তরে জমে থাকা মৃত কোষের স্তর পরিষ্কার করতে এক্সফলিয়েট করা অত্যন্ত জরুরি। এতে মৃত কোষ ও জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।
– সুন্দর ত্বকের জন্য আর্দ্রতা ধরে রাখা জরুরি। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। দিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকের বিশেষজ্ঞরা।
– সুন্দর ত্বক ও তারুণ্য ধরে রাখতে ত্যাগ করতে হবে কিছু বদভ্যাস। মদ্যপান এবং ধূমপানের কারণে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিজের জন্য এই অভ্যাসগুলো বাদ দিতে হবে।
– ত্রিশের পর রাতে ঘুমানের আগে অবশ্যই একটি ভালো এবং ত্বক উপযোগী নাইট ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। নাইট ক্রিম সারাদিনে ক্ষতি পুষিয়ে ত্বক ময়েশ্চারাইজ রাখতে সাহায্য করবে।
– বয়সের রেখা পড়তে শুরু করে চোখের আশপাশেই। এর মূল কারণ হতে পারে চোখের আশপাশের ত্বকের শুষ্কতা। তাই চোখের চারপাশের ত্বক সুন্দর রাখতে ভালো মানের আই ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
– শুধু মুখের ত্বকের নয়, যত্ন প্রয়োজন পুরো শরীরের। সারা শরীরের ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ময়েশ্চারাইজ রাখতে দিনে অন্তত দুবার লোশন ব্যবহার করা উচিত।
– যে কোনো বয়সেই সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। আর ত্রিশের পর এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি মাত্রার সানস্ক্রিন বেছে নেওয়া উচিত। তাছাড়া মেইকআপের ক্ষেত্রেও এসপিএফ যুক্ত ফাউন্ডেশন বেছে নিতে হবে।