প্রতিবেশী মুখার্জিবাবুর ছেলে অরিন্দম, বয়স ২৮, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরিও করে। মুখার্জিবাবু এবং তাঁর স্ত্রী ছেলের বিয়ে দেওয়ার জন্য একটু চেষ্টা করবেন ভেবেছিলেন, কিন্তু অরিন্দমের সাফ কথা, তিনি বিয়েতে আগ্রহী নন।
শুধু অরিন্দম কেন? অরিন্দমের মতো এমন অনেক শিক্ষিত, চাকরিরত যুবক যুবতীদের আজকের দিনে একটাই কথা ‘বিয়ে করব না’। কেন জেন ওয়াইয়ের বিয়েতে এত অনীহা? জেনে নিন এই প্রতিবেদনে।
১. প্রফেশনই জীবন
আজকের দিনের যুবক-যুবতীরা কাজকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেন। কাজের ক্ষতি হয়, এমন কোনও কাজই তাঁরা করতে চান না। তাই প্রেম, বিয়ে ইত্যাদি ব্যাপারগুলিকেও তাঁদের ‘অতিরিক্ত’ বলে মনে হয়। শুধু অতিরিক্ত কেন, বহু ক্ষেত্রে এই সম্পর্কগুলিকেও তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে বাধা বলে মনে হয়| অগত্যা বৈবাহিক সম্পর্কে ভীতি তৈরি হয়।
২. কমিটমেন্ট ফোবিয়া
কমিটমেন্ট ফোবিক শব্দটার সঙ্গে আজকের দিনে কেউ আর অপরিচিত নেই। ‘প্রেম করিস?’ গোছের প্রশ্ন করা হলে অনেকেই সপাটে বলে দেন, ‘না বাবা। আমি ভীষণ কমিটমেন্ট ফোবিক।’ এই প্রতিশ্রুতির ভীতি থেকেও স্টেডি রিলেশনশিপ কিংবা বিয়েতে আপত্তি জানায় আজকের প্রজন্ম। প্রতিশ্রুতি মানেই তো, দায়িত্ব নেওয়া, পাশে থাকা, আপস করার ঝুট-ঝামেলা। এসব দায়িত্ব নিয়ে এড়িয়ে যেতেই পছন্দ করে আজকের জেনারেশন।
৩. বিয়ের সনাতন ভাবনার মোহভঙ্গ
আজকের দিনে ব্রেকআপ, ডিভোর্স বেড়ে চলেছে ক্রমাগত। বিয়ে পবিত্র সম্পর্ক, সাত জন্মের বন্ধন এমন ভাবনা আর চেয়েও কেউ রাখতে পারছেন না। চোখের সামনে বিয়ে নামক সাত জন্মের সম্পর্ককে সাত দিনের মধ্যে ভেঙে যেতে দেখলে, আর ভরসা থাকেই বা কি করে? অগত্যা বিয়েতে অরুচি।
৪. ‘আমি’- খুঁজে নেওয়া
বর্তমান সময়ে নিজের মনকে খুঁজে পাওয়ার এক অদ্ভুত প্রবণতা দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে। একা থাকার এক অদ্ভুত ইচ্ছে ক্রমেই মানুষকে গ্রাস করছে। আর তাতেই বিয়ে করার ইচ্ছেতে ভাটা পরেছে।
৫. সনাতন দাম্পত্যে অরুচি
আজকের প্রজন্মের কাছে, চিরাচরিত প্রেম, সম্পর্ক, বিয়ে নিয়ে ধারণা বদলে গিয়েছে। স্ত্রীরা বিয়ের পর শুধুই সন্তান উৎপাদন করবেন, ঘরের কাজ করবেন এবং পুরুষই একমাত্র অর্থ উপার্জন করবেন, এমন ভাবনা জেন ওয়াইয়ের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। তাই এমন সম্পর্কেও তাঁরা আর আগ্রহী নন, যা প্রাচীন ভাবনাকে এখনও বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। তাই বিয়ের থেকেও লিভ-ইনে আজকের প্রজন্ম বেশি উৎসাহী।