ডেস্ক : ১১ বছরের মেয়েকে ভালোবাসার অপরাধে ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রকে খুন করার অভিযোগে ভারতের ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে এক শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার নেজমা খাতুন নামে ওই শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করা হয়। নেজমা খাতুনের বাস ভবনের সামনে পাওয়া গেছে নিহত ৭ম শ্রেণির ছাত্র বিনয় মাহতোর লাশ।
নেজমা খাতুন রাঁচির স্যাফায়ার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের হিন্দির শিক্ষক। ত্রিশোর্ধ এই নারী স্বামী ও দুই সন্তানসহ স্কুলের শিক্ষক কোয়ার্টারে বাস করতেন।
রাঁচি পুলিশের এসএসপি কুলদীপ দ্বিবেদি জানান, নেজমা খাতুনসহ তার স্বামী ও দুই সন্তানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ছেলেটি যে মেয়েকে ভালোবাসতো সেও রয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বৈজ্ঞানিক উপায়ে যেসব তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন সেগুলোর ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পুরো ঝাড়খণ্ডজুড়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এক মেয়ের বাবা জানান, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় আমাদের সমাজ কোথায় নেমে গেছে এবং ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত ১টা ৯মিনিটে বিনয়কে হোস্টেলের রুম থেকে হেঁটে বের হতে দেখা যায় সিসিটিভি ফুটেজে। এ সময় তাকে শিক্ষক হোস্টেলের দিকে যেতে দেখা যায়। রাত দেড়টার দিকে আরেকজন শিক্ষক টিচার্স হোস্টেলের প্রধান ফটকে বিনয়কে অর্ধমৃত অবস্থায় পান।
পুলিশ প্রথমে এক পুরুষ শিক্ষকের রুমে তল্লাশি চালিয়ে হাতে পাওয়া কিছু প্রমাণের বরাতে ধারণা করে যে এটা একটা সমকামের ঘটনা, এবং ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীকে খুন করা হয়েছে। তবে ছাত্রকে হত্যায় পুরুষ শিক্ষকের জড়িত থাকার বিষয়টির পক্ষে যথাযথ প্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ নতুন করে তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজে ছেলেটির হাঁটাচলা দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়, এটাই রাতে তার প্রথম বের হওয়া না। এতে পুলিশের তদন্ত নতুন মোড় নেয়। এরপরই তারা শিক্ষিকার মেয়ের সঙ্গে বিনয়ের প্রেমের বিষয়ে জানতে পারে।
তবে ওই মেয়ের অভিভাবকরা এই প্রেমের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, ভালোবাসা বুঝতে পারার মতো বয়স দুজনের হয়নি।
নাম প্রকাশে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই দিন রাতে শিক্ষিকা অপেক্ষায় ছিলেন কখন বিনয় আসবে। বাসায় পৌঁছার পরই তিনি নৃশংসভাবে তাকে মারধোর করেন এবং ধাক্কা দিয়ে শিক্ষক কোয়ার্টারের দোতলা থেকে নিচে ফেলে দেন। এতে ছেলেটি অর্ধমৃত হয়। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।