দিনের শুরুতে এক কাপ চা না পেলে কেমন যেন হাঁপিয়ে ওঠে শরীরটটা। তাই না? কিন্তু কী চা খান সকাল? দুধ চা হলে ক্ষণিকের জন্য মনটা চনমনে হয়ে উঠলেও শরীরের কিন্তু কোনও উপকারই হয় না। কিন্তু যদি এক পেয়ালা লাল চা খান, তাহলে কথাই নেই!
মনের পাশপাশি শরীরও চাঙ্গা হয়ে ওঠবে। কারণ লাল চা-এর উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। লাল চায়ে থিয়োফিলাইন নামে একটি উপাদান থাকে। এটি শরীরকে চাঙ্গা করতে দারুন কাজে দেয়। এখানেই শেষ নয়। এই পানীয়র আরও কিছু উপকারিতা আছে। যেমন-
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
শরীরে এল ডি এল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে থাকলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা যেমন বাড়ে, তেমনি নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। তাই তো রক্তে যাতে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা না বাড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? খুব সহজ! নিয়মিত ১-২ কাপ করে লাল চা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন এল ডি এল-এর মাত্রা কোনও দিনই মাত্রা ছাড়াবে না। সেই সঙ্গে কমবে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও।
হাড়কে শক্তপোক্ত করে
লাল চায়ে উপস্থিত ফাইটোকেমিক্যালস হাড়কে শক্ত করে। ফলে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
স্ট্রেস কমায়
লাল চায়ে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা স্ট্রেস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে মনকে চনমনে করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
ওজন হ্রাস করে
লাল চা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগই পায় না। তাই আপনি যদি ওজন কমাতে বদ্ধপরিকর হন, তাহলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন এই পানীয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
নানাবিধ অসুস্থতার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটা একান্ত প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে লাল চা। এখানেই শেষ নয়, এই পানীয়টি নানা ধরনের ক্ষতিকর ভাইরাসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে সহজে কোনও রোগ ছুঁতে পারে না।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
একদম ঠিক শুনেছেন। প্রতিদিন কয়েক কাপ লাল চা আপনাকে এই মারণ রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। আসলে এই পানীয়তে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ সহ এমন কিছু উপাদান, যা লাং, প্রস্টেট, কলোরেকটাল, ব্লাডার, ওরাল এবং ওভারিয়ান ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, লাল চা শরীরের যে কোনও অংশে ম্যালিগনেন্ট টিউমারের বৃদ্ধি আটকাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এক কাপ করে লাল চা খেলে ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। কারণ এই পানীয়টিতে উপস্থিত ক্যাটাচিন এবং থিয়াফ্লেবিন শরীরে প্রবেশ করার পর ইনসুলিনের উৎপাদন এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগই পায় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়
প্রতিদিন লাল চা খেলে হজম ক্ষমতা ভাল হতে শুরু করে। আসলে এতে রয়েছে টেনিস নামে একটি উপাদান, যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশপাশি গ্য়াস্ট্রিক এবং নানা ধরনের ইন্টেস্টিনাল রোগ সরাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হার্ট চাঙ্গা হয়ে ওঠে
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে লাল চায়ের কোনও বিকল্প হয় না। এই পানীয়তে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমিয়ে দেয়। স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতেও লাল চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
লাল চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ কম থাকায় এই পানীয়টি মস্তিষ্কে রক্তচলাচলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্রেইনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে স্ট্রেস কমে। প্রসঙ্গত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে এক মাস টানা যদি লাল চা খাওয়া যায়, তাহলে পারকিনস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।