ব্যবধান শুধু এই কারো ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশী আবার কারো ক্ষেত্রে কম। একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত নারীদের শরীরের এই হরমোন নির্গত হওয়াকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু যখন অতি মাত্রায় এই হরমোন নারী শরীর থেকে নির্গত হতে থাকে তখন এটিকে একটি মারাত্মক অসুস্থতা হিসেবে ধরা হয়। সাধারণত পিরিয়ডের আগে, নারীর গর্ভাবস্থায় ও সপ্তাহের কয়েকটা দিন এই হরমোন নির্গত হওয়া স্বাভাবিক।
তবে একটানা এভাবে হরমোন নির্গত হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। আমরা চাইলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে লিউকোরিয়া থেকে মুক্তি পেতে পারি। যে উপায়ে আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে লিউকোরিয়া থেকে মুক্তি পেতে পারি:
কলা
লিউকোরিয়া রোধে কলা খুব উপকারী ফল। আপনার লিউকোরিয়ার সমস্যা প্রতিরোধে দিনে দুইটি করে পাকা কলা খান। কলা খাওয়া চালু রাখুন ততদিন পর্যন্ত যতদিন না আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন।
মেথি বীজ
মেথি বীজ যোনির (vagina) পি এইচ(pH level) লেভেল বাড়িয়ে তুলে লিউকোরিয়া সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এক চা চামচ মেথি বীজ রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানিটুকুতে হাফ চা চামচ মধু মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। মেথি বীজ অন্যভাবেও আপনি ব্যবহার করতে পারেন। দুই চা চামচ মেথি বীজ চার কাপ পানিতে ফুটিয়ে নিন, এরপর পানি ছেঁকে নিয়ে ঠাণ্ডা করে সেই পানি দিয়ে আপনার যোনিপথ দিনে দুই থেকে চার বার ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এভাবে এটির ব্যবহার চালিয়ে যান যতদিন না আপনি প্রতিকার পাচ্ছেন।
আমলা
আমলার ভিটামিন সি ও অ্যান্টি ইনফেকশন উপাদান লিউকোরিয়া প্রতিরোধে খুব সাহায্য করে। এক চা চামচ শুকিয়ে যাওয়া আমলার পাউডার এক কাপ পানিতে নিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন যতক্ষন না এটি অর্ধেকে নেমে আসে। এরপর এই মিশ্রণে সামান্য চিনি বা মধু মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। ভালো ফলাফলের জন্য এটি এক মাস পান করুন।
ডুমুর
ডুমুরকে লিউকোরিয়া প্রতিরোধের মহাঔষধ বলা হয়। ডুমুরের শক্তিশালী লাক্সাটিভ (laxative) উপাদান শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিন নির্গত করে লিউকোরিয়া কমিয়ে তুলতে সাহায্য করে। দুই থেকে তিনটি শুকনো ডুমুর রাতে এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, পরের দিন সকালে পানিসহ ডুমুর ব্লেন্ড করে খালি পেটে পান করুন। এই পানীয় আপনার কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়া পর্যন্ত খেতে থাকুন।
ঢেঁড়স
লিউকোরিয়ার প্রতিকারক হিসেবে ঢেঁড়সের তুলনা হয়না। ১০০ গ্রাম ঢেঁড়স উত্তমরূপে ধুয়ে নিয়ে ছোট ছোট টুকরা করে কাটুন। হাফ লিটার পানিতে এই ঢেঁড়স জ্বালাতে থাকুন যতক্ষণ এটি ফুটে অর্ধেকটা না হয়। এরপর পানিটুকু ছেঁকে নিয়ে তিনভাগে ভাগ করে নিন এবং দিনে তিনবার এতে একটু মধু মিশিয়ে পান করুন। যতদিন না আপনার সমস্যার উন্নতি না হচ্ছে এভাবে এটি খেতে থাকুন।
নিম পাতা
নিম পাতার অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান আপনার যোনির ইনফেকশন নির্মূল করে লিউকোরিয়া সারিয়ে তোলে। আপনার হাতের একমুঠ নিম পাতা কিছুটা পানিতে নিয়ে সিদ্ধ করুন, এরপর এই পানি ছেঁকে ঠাণ্ডা করে দিনে একবার আপনার যোনি ধুতে ব্যবহার করুন। এই পদ্ধতি কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত চালিয়ে যান।
বেদানা
স্বাস্থ্যকরী এই ফল আপনার লিউকোরিয়ার (leucorrhea) সমস্যা সমাধানে খুব কাজ করে। প্রতিদিন একগ্লাস ফ্রেস বেদানা জুস গ্রহণ করুন এক মাসের জন্য। আশা করা যায় আপনার এই শারীরিক সমস্যার সহজ সমাধানে এটি খুব ভালো কাজ করবে।
আপনার রোগ শরীরে পুষে রাখবেন না। লিউকোরিয়া (leucorrhea) এমন একটি রোগ যা নারীর শরীরে ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করে তাই এখন থেকে সচেতনভাবে এই সমস্যার প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন।