দুপুর। স্থান এফডিসির পুরোনো ল্যাব ভবনের ছাদ। ছাদের ওপর মানুষের জটলা। নিচ থেকে তা দেখে আগ্রহ নিয়ে ছাদের দিকে রওনা হই আমরা। উঠে দেখি, ছাদের এক পাশে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ছোট বিছানা, মাঝে রাখা ক্যারম বোর্ড, একপাশে ছোট দোতলা কবুতরের ঘর। সেই ঘরের মধ্যে একঝাঁক কবুতর।
তখনো পরিচিত কারও দেখা মেলেনি। আমাদের আগ্রহ টের পেয়ে ইউনিটের একজন বললেন, ‘বসগিরি ছবির শুটিং হইব। এইডা বসের আস্তানা। সেটের কাজ ঠিকঠাক চলতাছে। এখনই শাকিব ভাই আইব।’
ততক্ষণে লাইট-ক্যামেরা সাজানোর কাজ চলছে। এর মধ্যে দেখি মনিটরে বসে আছেন পরিচালক শামীম আহমেদ রনি। কাছে গিয়ে দেখা যায়, কবুতরের ঘর ধরে লাইট, ক্যামেরার জায়গা বুঝে নিতে ব্যস্ত তিনি। একফাঁকে তাঁকে জিজ্ঞেস করি, খারাপ মানুষের আস্তানায় শান্তির দূত পায়রা? এ কথা শুনে রনি বলেন, ‘এখানে বস অপরাধজগতের ডন হলেও কোনো কোনো সময় তাঁর চরিত্রের মধ্যে মানবতাবোধও ধরা দেয়। আস্তানায় বসে মাঝেমধ্যে ইচ্ছা হলেই ঘর থেকে একটি করে কবুতর বের করে খোলা আকাশে উড়িয়ে দেন।’
পরিচালক বললেন, কবুতরের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কবুতর উড়িয়ে দেওয়ার এমন একটি দৃশ্য এখন ধারণ করা হবে।
পেছনে তাকিয়ে দেখি সেটে ঢুকছেন শাকিব খান। সঙ্গে মাজনুন মিজান।
তাঁকে দেখে ইউনিটের সবাই নড়েচড়ে বসলেন। শাকিব তাঁর আস্তানার চারপাশ দেখে নিলেন। কবুতরের ঘরের দিকে তাকিয়ে তাঁর চোখ স্থির হলো। এগিয়ে গিয়ে মন দিয়ে দেখলেন কবুতরগুলো। এরপর বললেন, ‘কবুতর এত কম কেন? এই কবুতরে হবে না। এক হাজার কবুতর আনাও। যাও, তাড়াতাড়ি যাও যাও! যতক্ষণ কবুতর না আনছ, ততক্ষণ শট দিচ্ছি না।’ বলেই গ্রিনরুমের দিকে হাঁটা শুরু করলেন তিনি। ইউনিটে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে গেছে। কবুতর আনতে কে যাবেন না যাবেন, তা নিয়ে ইউনিটে শুরু হলো রীতিমতো যুদ্ধ! একপর্যায়ে ইউনিটের দুজনকে কবুতর আনতে পাঠিয়ে দিলেন পরিচালক।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর কবুতরভর্তি বেশ কয়েকটি ঝুড়ি এসে হাজির। ইউনিটের কর্মীরা সেগুলো ছাদের ওপর ওঠাচ্ছেন। তবে কবুতরের সংখ্যা হাজার হবে কি না, তা বোঝা গেল না।
কবুতরের সংখ্যা বাড়িয়ে শাকিব খানকে ডাকতে ইউনিটের একজন গেলেন গ্রিনরুমের দিকে। একটু পর সেটে শাকিব এসে হাজির। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে শট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। প্রস্তুত তাঁর কবুতরও!