আমেরিকার ম্যানহাটানের বিখ্যাত একটি ভবন স্যান রিমো। ২৭ তলা ভবনের চূড়ায় রয়েছে হলিউড তারকা ডেমি মুরের বিলাসবহুল পেন্ট হাউজ। এটি বিক্রি হবে। দাম হাঁকা হয়েছে ৭৫ মিলিয়ন ডলার! একবছর আগে থেকে দরকষাকষি চলছে। যদি এ দামের আশপাশেও বিক্রি হয়, তবে এই ভবনে কোনো অ্যাপার্টমেন্ট ২৬.৪ মিলিয়ন ডলারে বিক্রির রেকর্ডটি ভেঙে যাবে।
৭ হাজার বর্গফুটের পেন্টহাউজটি ডেমি মুর কিনেছিলেন ১৯৯০ সালে। ওই বছরই তার ‘ঘোস্ট’ মুভিটি বক্স অফিসে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে। এটি কেনার প্রসঙ্গে মুর জানিয়েছিলেন, আমি ফিফথ অ্যাভিনিউ, সেন্ট্রাল পার্ক সাউথ এবং সেন্ট্রাল পার্ক ওয়েস্টে ঘুরে দেখেছি। কিন্তু কোনোটাই এটার মতো না।
তবে স্যান রিমোতে ডেমি মুর একাই তারকা নন। এখানে টাইগার উডস, স্টিভনে স্পিলবার্গ, ডোনা কারান, ডাস্টিন হফম্যান, ডায়ানে কিটন এবং রিটা হেওর্থ থাকেন। এখানে ম্যাডোনা ১৯৮৫ সালে একটি অ্যাপর্টমেন্ট কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার কাছে বিক্রি করেননি কর্তৃপক্ষ।
মুরের পেন্ট হাউজের এত দাম হাঁকার কারণটা কি? এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ব্রোকার মোডলিন গ্রুপের অ্যাডাম মোডলিন। ঘুরে আসা যাক মুরের তিনটি তলা জুড়ে থাকা পিএইচ২৬সি নম্বরের পেন্ট হাউজে।
১. স্যান রিমো তৈরি হয় ১৯৩০ সালে। এর ঠিকানা ১৪৫-১৪৬ সেন্ট্রাল পার্ক ওয়েস্ট। এটি সেভেনটি ফোর্থ এবং সেভেনটি ফিফথ স্ট্রিট জুড়ে অবস্থান করছে। সেন্ট্রাল পার্কের আইকনিক ভবন বলা হয় একে।
২. এর দক্ষিণের টাওয়ারে অভিজাত মানুষরা থাকেন, জানান মোডলিন। অর্থাৎ ডেমি মুরের পেন্টহাউজটা দক্ষিণের টাওয়ারেই।
৩. ১৪৫ সেন্ট্রাল পার্কে ওয়েস্টের লবিতে প্রবেশ করে সোনালি কারুকার্যখচিত শৈল্পিক এক লিফটে চড়ে সোজা ২৬ তলায়। বিশাল খোলামেলা এক লিভিং রুমে দামি টাইলসের কারুকাজ। নীলাভ ফায়ারপ্লেসটা নজর কেড়ে নেয়। ওপরের দিকে তাকালে ছাদে স্যান রিমোর নিজস্ব প্লাস্টারের শিল্প চোখে পড়বে।
৪. লাইব্রেরি ছাড়িয়ে ডাইনিং রুম। সেখানে এক বিশাল ঝাড়বাতি। কিচেন থেকে জর্জ ওয়াশিংটন ব্রিজটি দেখা যায়। টাওয়ার ভবনে বসবাসের বড় সুবিধা হলো, এর চারপাশে অন্য কোনো ভবন দৃষ্টিপথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।
৫. এই ফ্লোর থেকে একটি দৃষ্টিনন্দন কাঠের সিঁড়ি বেয়ে ২৭ তলায় উঠতে পারবেন। এই তলাকে বলে ‘বেডরুম ফ্লোর’। সেখান রয়েছে ৪টি মাস্টার বেডরুম এবং ৩টি কর্মীদের রুম। তবে ডেমি মুর ২টি স্টাফ রুমকে এক করে আরেকটি মাস্টার বেডরুম করে নিয়েছেন।
৬. পেন্টহাউজটি বেশ কিছু দিন খালি পড়ে থাকে। এখানে আসবাব ও সাজসজ্জার বিলাসিতা নেই। তাই কিছু শীতল বলে মনে হয়। কিন্তু পেন্টহাউজটি মনটাকে জুড়িয়ে দেয়।
৭. টাওয়ারের ২৮ তলাকে ‘এন্টারটেইনিং ফ্লোর’ বলা হয়। সেখানে আছে একটি বেডরুম, কিচেন এবং বাথরুম। আরো আছে বসার জন্যে আরামদায়ক সোফা, দুটো প্রজেক্টর এবং একটি বিশাল ডিজিটাল পর্দা। কাঠের ওয়াল তিন দিকে। আর এক দিকের পুরো দেয়ালটাই কাচের সুরম্য জানালা।
৮. এই তলার একটি কাচের দরজা থেকে বেরোলেই মিলবে একটি প্রাইভেট টেরেস। খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে সেখান থেকে দেখতে পাবেন সেন্ট্রাল পার্কের অপূর্ব দৃশ্য। পাশের টাওয়ারটিকেও স্পষ্ট দেখা যায় এখান থেকে।
সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার