‘দুই পারের কানাকানি’ নামের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন কলকাতার নন্দিত আবৃত্তিশিল্পী ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৫ মার্চ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল ডার্ড গ্রুপ। অনুষ্ঠান শেষ করে এই আবৃত্তিশিল্পী দেশে ফিরে গেছেন গতকাল রোববার। যাওয়ার আগে আবৃত্তি ও বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
আপনি দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয়। রহস্য কী?
এটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ। আমি যখন দূরদর্শনে অনুষ্ঠান করতাম বা খবর পড়তাম, তখন বাংলাদেশ থেকে অনেক চিঠি পেয়েছি। এ নিয়ে একটা মজার ঘটনা আছে। একবার আমার চুলের স্টাইল পরিবর্তন করে অনুষ্ঠান করছি। সেই স্টাইল টিভিতে দেখার পর সবচেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া পেয়েছি আমার বাংলাদেশি ভক্তদের কাছ থেকে। তাঁরা চিঠি দিয়ে অনুরোধ করায় আমাকে আবার আগের স্টাইলে ফিরে আসতে হয়েছিল।
এই নিয়ে কবার এলেন বাংলাদেশে?
চার-পাঁচবার তো হবেই। প্রথম এসেছিলাম বছর তিনেক আগে, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তারপর তো নিয়মিতই আসা হয়।
একজন আবৃত্তিশিল্পীর কী গুণ থাকা দরকার বলে আপনার মনে হয়?
সব বিষয়ে তাঁর জ্ঞান থাকা খুব জরুরি। তবে জ্ঞান থাকা মানেই কিন্তু সব জায়গায় ফলাতে হবে এমন নয়। ওই জ্ঞান পরিবেশনাকে বুদ্ধিদীপ্ত করতে কাজে লাগবে। আরেকটা ব্যাপার একটু বলে নিই, অন্য সব শিল্পচর্চার মতো আবৃত্তিও কিন্তু অনেক চর্চার ব্যাপার। তাই হুট করে কেউ যদি চায় আবৃত্তিকার হয়ে যাবে, সেটা সম্ভব নয়। এটা সাধনার বিষয়, নিয়মিত চর্চার ব্যাপার।
আপনার পড়াশোনা অর্থনীতিতে। কিন্তু আবৃত্তি পেশা। এটার কি কোনো বিশেষ কারণ আছে?
আছে। কারণটি হলো ‘ভালো লাগা’। পড়াশোনা করে চাকরিও করেছি বছর তিনেক। ওই সময়টায় নিয়মিত টিভিতে সংবাদ পড়ি, অনুষ্ঠান করি। প্রতিদিন ছুটি নিয়ে অনুষ্ঠান করতে সমস্যা হতো। এ কারণে একদিন চাকরিটাই ছেড়ে দিই। এখন প্যাশন বলি আর পেশা—দুটোই কিন্তু আবৃত্তি। তাই আমার মনে হয়, ছেলেমেয়ে যা করে আনন্দ পায়, সেদিকেই নজর দেওয়া উচিত মা-বাবার।
আবৃত্তির বাইরে আর কিছু করেন?
নিজে কিছু নির্দেশনা দিই। তা ছাড়া ‘কাব্যায়ন’ নামে আমার একটি আবৃত্তি শেখানোর সংগঠন আছে। ২৫ বছর বয়সী এই সংগঠনটি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। তা ছাড়া ‘ব্রততী পরম্পরা’ নামে আরও একটি সংগঠন নিয়ে কাজ করছি। নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে অসহায় আবৃত্তিশিল্পীদের সহযোগিতা করা হয় এর মাধ্যমে।
বাংলাদেশের দর্শকদের নিয়ে কিছু বলুন।
বাংলাদেশে যতগুলো শো করেছি প্রতিটি একেবারে হাউসফুল। এই দেশের দর্শকদের বড় গুণ, তাঁরা বুঝে প্রতিটি আবৃত্তির প্রতিক্রিয়া দেন। এতে করে দর্শকদের সঙ্গে একটা সংযোগ ঘটে। আমার কাছে ব্যাপারটি দারুণ লাগে।