হ্যালোটুডে ডটকম: এক্কেবারে ঠান্ডা মাথায় খুন! প্রথমে প্রেমিকা নিয়ে ঘুরতে যাওয়া। সেখানে গিয়ে দু’জনে মিলে সেল্ফি তোলা। তার পর প্রেমিকার গলা কেটে খুন করা। শুধু তাই নয়, খুন করার পর সেল্ফির ছবিকে হোয়াট্সঅ্যাপের ডিসপ্লে পিকচারে সেট করা— সব মিলিয়ে এক দম পরিকল্পিত খুন।
ভারতের দেহরাদূনের ঘটনা। অভিযুক্ত প্রেমিক আশিস কুমার। বয়স ২৭। পুলিশ জানিয়েছে, গুরপ্রীত কাউর (৩০) নামে এক নারীর সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আশিসের। গুরপ্রীত ও তাঁর স্বামী গুরজিত আশিসের বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন পাঁচ বছর ধরে। গুরপ্রীতের স্বামী এক জন ব্যসায়ী। সে কারণে হামেশাই তাঁকে বাড়ির বাইরে যেতে হতো। এর মধ্যেই বাড়ির মালিকের ছেলে আশিসের সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাস দুয়েক আগে গুরপ্রীতরা দেহরাদূনের রেস্ট ক্যাম্প এলাকায় চলে যান। সেখান থেকেই বাধে বিপত্তি। গত শনিবার প্রেম নগরের একটি চা বাগানে গুরপ্রীতকে নিয়ে যান আশিস। সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ সময় কাটান দু’জনে। তাঁদের মধ্যে কথাবার্তাও হয়। আশিস গুরপ্রীতকে নিয়ে তাঁর মোবাইলে ফোনে সেল্ফিও তোলেন। গুরপ্রীত ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তাঁর কী হতে চলেছে। হাসতা হাসতে গুরপ্রীতকে হাঠাত্ই শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করেন আশিস। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পকেট থেকে ধারাল ছুরি বের করে গুরপ্রীতের গলায় চালিয়ে দেন তিনি। গুরপ্রীতের চিত্কার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা দৌড়ে আসেন। তাঁদের আসতে দেখে গুরপ্রীতকে ফেলে রেখে পালান আশিস। গুরপ্রীতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পর আশিসের খোঁজে তল্লাশি চালায় দেহরাদূন পুলিশ। মুসৌরির একটি হোটেলের ঘর থেকে হাতের শিরা কাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আশিসকে। এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘ঠিক সময়ে না পৌঁছলে ছেলেটি মরে যেত। প্রচুর রক্তপাত হয়েছে।’
হোটেলের কর্মীরা এই ঘটনা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ছেলেটিকে দেখে বোঝাই যায়নি যে সে খুন করে এসেছে। হোটেল ভাড়া নেওয়ার সময় বেশ হাসিখুশি ছিল।
অন্য দিকে, হাসপাতালের বেডে শুয়ে আশিস বলেন, ‘এই কাজের জন্য মোটেই অনুতপ্ত নই। বেঁচে আছি এটাই আমার বিরক্তি। আমার মরে যাওয়াই উচিত ছিল।’
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, সন্দেহের বশেই গুরপ্রীতকে খুন করেছেন আশিস। তাঁর ধারণা ছিল গুরপ্রীতের সঙ্গে আরও অনেকের সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই আশিসকে গ্রেফতার করা হবে।