প্রতিদিন হয়তো ভারী মেকআপ আমরা অনেকেই ব্যবহার করিনা। কিন্তু উৎসব অনুষ্ঠান কিংবা একটি বিশেষ উপলক্ষে একটু খানি বাড়তি সাজ সাজতে কে না চায়? তবে সেই বাড়তি সাজের ভিত্তি হিসাবে যে বস্তুটি কাজ করে, সেটা হলো একটি নিখুঁত দাগহীন ত্বক। শতভাগ নিখুঁত ত্বক কার থাকে বলুন? কিন্তু আধুনিক মেকআপের কারসাজিতে মুছে ফেলা সম্ভব ত্বকের সমস্ত ত্রুটি। আসুন জেনে নেই, কিভাবে মেকআপের কারিগরিতে ঢেকে ফেলা যায় ত্বকের সমস্ত ত্রুটি। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। আজ আমরা কথা বলবো ফাউন্ডেশন নিয়ে।
জেনে নিন কিভাবে, কখন, কতটা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন।
স্বাভাবিক বা তৈলাক্ত ত্বকে ফাউন্ডেশন লাগাতে চাইলে ওয়াটার বেসড ফাউন্ডেশন লাগানোই ভালো। ত্বকে লাগানোর হাতের তালুতে অল্প একটু ঢেলে তাতে কয়েক ফোঁটা জল মিশিয়ে তবে ব্যবহার করুন। অথবা এর বদলে প্যানস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেটাও লাগানোর আগে অল্প জল মিশিয়ে নেবেন। ফাউন্ডেশন লাগানোর পর পাউডার লাগান, তাহলে ফাউন্ডেশনটা বসে যাবে। ব্যস। স্বাভাবিক বা তৈলাক্ত ত্বকের জন্যে অয়েলফ্রি ফাউন্ডেশন বেছে নিন। তাতে মেকআপ স্থায়ী হবে অনেকক্ষণ।
শুষ্ক ত্বকে একটা টানটান ভাব থাবে। আবার এই ত্বকের অধিকারীদের বয়স একটু বাড়লেই দেখা দেয় বলিরেখা। তাই তাদের ভারী ফাউন্ডেশন Foundation ব্যবহার না করাই ভালো। কেননা ভারী ফাউন্ডেশনে ত্বকের বলিরেখা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। লাইটওয়েট লিক্ইুড ও পাউডার ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন আপনারা। আর ত্বকে অনুজ্জ্বল ভাব থাকলে নেবেন সেই সব ফাউন্ডেশন যেগুলোতে ময়েশ্চারাইজার থাকে। লিক্ইুড ফাউন্ডেশনটা আপনার শুষ্ক ত্বকের অনুজ্জ্বল ভাব ঢেকে ফেলবে। শুষ্ক ত্বকে ঘন ফাউন্ডেশন দেওয়াই ভালো তাহলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখবে। মুখে যদি কোনো দাগ-ছোপ না থাকে তাহলেতো সোনায় সোহাগা। ব্যবহার করতে পারেন লাইটটাচ লিক্যুইড ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশন অবশ্যই আপনার স্কিনটোনের সাথে যায় এমন রঙের ব্যবহার করবেন। বোতলে ফাউন্ডেশনের রং খানিকটা গাঢ় দেখায়। তাই কেনার সময় ত্বকের সঙ্গে যে ফাউন্ডেশনের রং মানানসই হয় তা বেছে নিতে হয়। হালকা এবং গাঢ় দু’রকমের মেকআপই নিতে পারেন নিজের জন্যে। হালকা রং ত্বককে উজ্জ্বল করবে, গাঢ় রং নানা জায়গায় শেডিং হিসেবে কাজ করবে। গাঢ় ও ক্রিম জাতীয় ফাউন্ডেশন পানিতে ধুয়ে যেতে পারে। তাই হাল্কা লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করাই ভালো।
মনে রাখবেন যে সকল বিষয়-
* স্বাভাবিক আলোতে ফাউন্ডেশন লাগান।
* আপনার মুখখানায় যদি দাগ থাকে অনেক, তাহলে প্রথমে দাগের স্থান গুলোতে কন্সিলার লাগিয়ে নিন অল্প করে। তারপর তা ব্রাশের সাহায্যে মুখে সমানভাবে ছড়িয়ে দিন। তার ওপরে আবার হাল্কা ফাউন্ডেশন লাগান।
* মুখে খুব বেশি ফাউন্ডেশন না দিয়ে হালকা করে দিন। মুখে ফাউন্ডেশনের গাঢ় পরত নিশ্চয়ই দৃষ্টিমধুর নয়।
* ফাউন্ডেশন লাগাতে ভেজা স্পঞ্জ ব্যবহার করুন। সমস্ত মুখে সমানভাবে ছড়িয়ে যাবে এবং বেশিক্ষণ টেকসই হবে।
* ফাউন্ডেশন খুব বেশি তৈলাক্ত হলে তাতে কয়েকফোঁটা স্কিন টোনার ঢেলে শিশি ঝাঁকিয়ে তরল করে নিন।
* ফাউন্ডেশন লাগানোর পর হাল্কা করে পাউডার ছড়িয়ে দিন। কয়েক সেকেন্ড পর ব্রাশ দিয়ে অতিরিক্ত পাউডার ঝেড়ে ফেলুন।
* মুখে কেক ফাউন্ডশন না লাগানোই ভালো। এটা স্কিনের জন্যে খুব ভারী হয়ে যায়। যদিও এটি ত্বকের অনেক অনাকাঙ্খিত দাগ ঢাকতে সাহায্য করে তবে যদি সঠিকটা ব্যবহার না করেন তাহলে মুখে একটা অস্বাভাবিক লুক চলে আসে।
* স্কিনটোনের সাথে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। যদি আপনার ফাউন্ডেশন ত্বকের চেয়ে বেশি গাঢ় হয়ে যায় তাহলে আপনাকে কমিক চরিত্রের মতো অস্বাভাবিক দেখাবে।
* কখনোই বেশি ফাউন্ডেশন লাগাবেন না। এমনকি নিজের মুখের ছোট ছোট খুঁতগুলো ঢাকার জন্যেও।
* ফাউন্ডেশন সারা মুখে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। তা না হলে সাজটাই মাটি। কপাল থেকে ব্লেন্ড শুরু করুন তারপর সারা মুখে ছড়িয়ে দিন ফাউন্ডেশন। ঘাড়েও হালকা করে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করতে ভুলবেন না।
তবে, আর দেরি কিসের? ফাউন্ডেশনের সঠিক ব্যবহারে নিখুঁত হয়ে উঠুক ত্বক, আপনার বিশেষ সাজটি হয়ে উঠুক আরও ঝলমলে।
তথ্যসুত্রঃ প্রিয় লাইফ